যশোরে একাধিক প্রেম ও প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ের অভিযোগে রিফাত হোসেন মানিক (২৬) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। এ প্রতারণার মাধ্যমে একাধিক নারীর কাছ থেকে নগদ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রিফাতের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
এদিকে, আটকের পর তার দুই স্ত্রী থানায় গিয়ে রিফাতের বিচার দাবি করেন। রিফাত যশোর সদর উপজেলার ঝুমঝুমপুর বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে।
রিফাতের স্ত্রী সদর উপজেলার সতীঘাটা গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের মেয়ে ফারজানা আক্তার মুন্নি কোতোয়ালি থানায় এসে অভিযোগ করে বলেন, আমি এবং রিফাত যশোর সরকারি সিটি কলেজে পড়তাম। আমরা দু’জনই মার্স্টাস শেষ করেছি। আমাদের আট বছরের প্রেমের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে সে আমার কাছ থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চলতি বছরের ২৭ মে পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়। সামাজিকভাবে ১০ লাখ টাকারও বেশি টাকা ব্যয় করে আমাদের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পরে জানতে পারি রিফাত তার বাড়ির পাশে হাফিজা খাতুন ঝুমুর নামে আরো একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে।
তিনি বলেন, রিফাত সাতক্ষীরার একটি মেয়ের সাথে প্রেম করে ওই মেয়ের কাছ থেকেও কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া ঢাকায় নাজনিন নামে একটি মেয়ের সাথে রিফাতের এখন প্রেম চলছে। ওই নাজনিনও মাঝে মাঝে রিফাতের কাছে যশোরে আসে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল আট বছর ধরে প্রেম করলেও আমি কিছুই জানতে পারিনি। রিফাত একজন প্রতারক। প্রেম ও বিয়ে করা তার নেশ ও পেশা। আমি রিফাতের বিচার চাই, কঠিন শাস্তি চাই। অন্য কোন মেয়ে যেন রিফাতের প্রেমের ফাঁদে না পড়ে।
কোতোয়ালি থানায় আসা রিফাতের অপর প্রেমিকা হাফিজা খাতুন ঝুমুর অভিযোগ করে বলেন, আমি যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে ম্যানেজমেন্টের বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। রিফাতের সাথে আমার পাঁচ বছর ধরে প্রেম। চলতি বছরের ২০ এপ্রিল রিফাতের সাথে আমার কাজি অফিসে বিয়ে হয়। বিয়ের বিষয়টি পরিবারকে তিন বছর পরে জানাবে একথা বলে রিফাত শহরের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে মেলামেশা করে। আমি তাকে অনেক টাক দিয়েছি। আমাকে মাঝে মাঝে খুলনায় নিয়ে যেত। গত ২১ অক্টোবর যশোর আইটি পার্কে রিফাতের সাথে আমার বিয়ে নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আইট পার্কের লোকজন রিফাতকে আটক করে রাখে। আমার কথায় তারা রিফাতকে ছেড়েও দেয়। এখন দেখছি রিফাত ফারজানা আক্তার মুন্নি নামে একজনকে বিয়ে করেছে। শোনা যাচ্ছে ঢাকা ও সাতক্ষীরায় তার আরো দুটি প্রেম চলছে। আমি রিফাতের বিচাই চাই, কঠোর শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, রিফাত একজন প্রেম প্রতারক বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। প্রেম ও বিয়ে করা তার নেশা ও পেশা। রিফাতের দুই স্ত্রীই এখন থানায় আছে। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই