খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১০ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  রিসেট বাটন বলতে ৭১ এর গর্বিত ইতিহাস নয় দূর্নীতিগ্রস্থ রাজনীতি মুছে নতুন সূচনার কথা বলেছেন ড. ইউনূস : প্রেস উইং
  পিরোজপুরে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে শিশুসহ ৮ জন নিহত
মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ

কেশবপুরে স্নাতকোত্তর পাশ দু’সহদরের গ্রীষ্মকালিন তরমুজ চাষে সাফল্য

মেহেদী হাসান জাহিদ, কেশবপুর

যশোরের কেশবপুরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ শেষে চাকরি না করে কৃষিকাজে মনোযোগী হয়ে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন দু’সহদর। অত্যাধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালিন তরমুজ চাষ করে উপজেলাব্যাপি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন অপু ও তপু। মাত্র ৫/৬ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ১৬ শতক জমিতে ৪৫ দিনে তরমুজ চাষ করে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা আয়ের আশা তাদের। তাদের স্বপ্ন অনেকটা পুরণ হতে চলেছে। ইতোমধ্যে ৩০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন।

সরেজমিন জানাগেছে, উপজেলার মংগলকোট গ্রামের আব্দুল গনি দফাদারের ৩ পুত্রের মধ্যে অপু ও তপু মাস্টার্স পাশ। ক্যারিয়ার গড়তে বছরের পর বছর চাকরির পিছনে না ছুটে তাঁরা কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন। প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউব ও যশোরের ঝিকরগাছার সফলচাষি তাদের ফুফাত ভাইয়ের পরামর্শ ও সহযোগিতায় মাত্র ১৬শতক জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালিন তরমুজ চাষ করেন। আর তাতে সাফল্যও আসে।

তারা বলেন, মাত্র ৪৫ দিনে অল্প টাকা বিনিয়োগ করে গ্রীষ্মকালিন তরমুজ চাষে হাজার হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। জেসমিন-২ জাতের তরমুজের স্বাদ যেমন ভাল, তেমনি ভাল ফলনও পাওয়া যায়। কড়া মিষ্টির কারণে বাজারে এর চাহিদাও বেশি। ১৬ শতক জমিতে তরমুজ চাষে তাদের প্রায় ৫/৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তারা জানান, প্রথমে ৫ শতাধিক চারা রোপন করে প্রত্যেক গাছে দু’টি ফল রেখে বাকি ফল কেটে দিতে হয়। ঐ দু’টি ফল ও গাছ সঠিক পরিচর্যা করলে প্রায় ২ হাজার কেজি তরমুজ উৎপাদন করা সম্ভব। সপ্তাহে ২/৩ দিন পরপর জমি থেকে তরমুজ তুলে বাজারজাত করতে হয়। ইতোমধ্যে অনেকটা সফল হয়েছেন তারা।

আরও জানান, এ পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি হয়েছে। ক্ষেতে অবশিষ্ট তরমুজ যা আছে সব মিলিয়ে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি হবে। বর্তমানে গ্রীষ্মকালিন দু’টি জাতের তরমুজের ভাল ফলন পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে জেসমিন-২ জাত ৪৫ দিনে ও ব্লাক জাম্বু ৬৫ দিনে উৎপাদন হচ্ছে। জেসমিন-২ ওজনে প্রায় আড়াই কেজি ও ব্লাক জাম্বু ৫ থেকে ৬ কেজি হয়। ইউরিয়া সার বাদে মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করলে প্রায় সব ধরণের সার ব্যবহার করতে হয়। ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এ জাতের তরমুজের বীজগুলো ভালভাবে অঙ্কুরিত হয়। ফুল ও ফল আসার পর গাছে জিঙ্ক, বোরণ ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়। উষ্ণ জলবায়ুতে সবচেয়ে তরমুজ ভাল জন্মায়।

এক প্রশ্নের জবাবে সহদর অপু ও তপু বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা পেলে আরও ভাল ফলন পাওয়া যেত। ৫নং ইউনিয়ন এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে অনেকবার ফোন দিয়েও তরমুজ ক্ষেতে আনতে পারেনি তারা।

৬নং ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনাথ বন্ধু দাস বলেন, তরমুজের জন্য প্রচুর রোদ এবং শুস্ক আবহাওয়া প্রয়োজন। মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া ও অতিবৃষ্টির কারণে ফুল ও ফলের বৃদ্ধি কমে যায় এবং বর্ষাকালে পাকলে তরমুজের মিষ্টির পরিমাণ কমে যায়। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এ জাতের বীজ বপন ও উৎপাদন মৌসুম ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। তবে বীজ বপনের জন্য ফেব্রুয়ারি মাস সর্বোত্তম। গ্রীষ্মকালিন তরমুজ অসময়ে একটি লাভজনক ফসল।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, অধিক আর্দ্রতা তরমুজ চাষের জন্য ক্ষতিকর। খরা ও উষ্ণ তাপমাত্রা সহনশীল উন্নত জাতের তরমুজের বীজ উর্র্বর দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটিতে রোপন করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!