দেশে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেকেন্ড ওয়েভে যশোরের চৌগাছাতেও আক্রান্তের সংখ্যা আশ্চার্যজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছর জুন মাসেই ৪২৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২০৮ জন করোনা পজেটিভ হয়েছেন।
মহামারি শুরু থেকে আজ পর্যন্ত উপজেলাতে ২১৬০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫৭২ জন পজেটিভ হয়েছেন। গত বছর (৪ এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর) ১০৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫৫ জন। বাকি ১০৮২ জনের মধ্যে চলতি বছর জানুয়ারিতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ জন, মার্চে ৩ জন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রকট হওয়ার পরে মে মাসে ১৩ জন পজেটিভ হয়েছিলেন। মোট আক্রান্তদের মধ্যে এযাবৎ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলাতে আক্রান্তের তালিকায় আছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক, যশোর পল্লী বিদ্যুতের চৌগাছা অঞ্চলের ডিজিএমসহ অনেকে। করোনায় মোট আক্রান্তের (গত বছর থেকে আজ পর্যন্ত) মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় ১৫০ জন (ফিল্ড স্টাফসহ) কর্মকর্তা-কর্মচারির মধ্যে ৩৪ জন করোনা পজেটিভ হয়েছেন। সে তালিকায় ৭ জন ডাক্তারসহ ৬ জন নার্স, এসএসিএমও ১ জন, ৪ জন সিএইচসিপি এবং অন্যান্য ১৬ জন কর্মচারি রয়েছেন।
২০২০ সালে প্রথম আক্রান্তদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা.নাহিদ সিরাজের শারিরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হলে তাকে সরকারি সহযোগিতায় এয়ার এম্বুলেন্সে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য রেফার করা হয়েছিল। বলছিলেন চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.লুৎফুন্নাহার লাকি।
চলতি বছরের ১০ জুন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ করোনায় মৃত্যুবরন করেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলি এনামুল হক।
কিন্তু উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “অগ্রযাত্রা”র হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যাটাও জুন মাসেই দীর্ঘ হয়েছে। উপজেলাতে করোনায় এবং এ রোগের উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া প্রায় ২০ জনের মৃতদেহ সৎকার করেছেন তারা। সংগঠনের সভাপতি হাসিবুর রহমান হাসিব বলেন, মৃতদের অনেকে উপজেলার বাইরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করেন।
এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের মাঠচাকলা গ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হকের আলীর ছেলে ইসমাইলের মৃত্যুর সংবাদে দাফন করতে চলেছেন অগ্রযাত্রার হাসিব, জাহিদ, এ্যাম্বুরেন্স চালক আলমরা। মৃত্যুর ঘরে যোগ হলো আরো একটি সংখ্যা।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি