বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বিষ মেশানো খাবার খেয়ে সুবোধ দাস (৭৯) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ মে) দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।
এর আগে বুধবার (১৯ মে) রাতের খাবার খাওয়ার পরে সুবোধ দাস, তার স্ত্রী সীমা দাস (৭০), পুত্রবধু রুনু দাস (৩৫), ও নাতি সঞ্জিব দাস (১২) অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে তাদের।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় বেলা ১১টার দিকে সুবোধকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অন্যরা বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া একই সময় রাতের খাবার খাওয়ার পরে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন সুবোধ শেখের প্রতিবেশী বাস চালক মহাদেব দাস (৫০)। তিনি বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহত সুবোধ দাস মোরেলগঞ্জ উপজেলার বলভাদ্রপুর গ্রামের কেশব লাল দাসের ছেলে।
নিহত সুবোধ দাসের নিকট আত্মীয় ও বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিপন দাস বলেন, সুবোধ দাসের ছেলে বিদ্যুৎ দাস বলভাদ্রপুর বাজারে ছিল। বাড়িতে যেতে দেড়ি হওয়ায় সুবোধ দাস, তার স্ত্রী, পুত্রবধু ও নাতী সঞ্জিব দাস এক সাথে রাতের খাবার খায়। খাওয়ার সাথে সাথে তাদের বমি শুরু হয়। ধীরে ধীরে অচেতন হয়ে পড়তে শুরু করে তারা। প্রতিবেশীরা টের পেয়ে বিদ্যুৎকে খবর দেয়। পরে তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে খুলনা নেওয়ার পথে সুবোধ দাস মারা যায়। হাসপাতালে থাকা তার নাতী ও পুত্রবধুর জ্ঞান ফিরেছে। তবে তার স্ত্রীর এখনও জ্ঞান ফেরেনি। এছাড়াও সুবোধের প্রতিবেশী বাস চালক মহাদেব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যেসব দুস্কৃতিকারীরা চুরি বা ডাকাতির উদ্দেশ্যে খাবারের সাথে বিষ মেশায় তাদেরকে ধিক্কার জানাই। এসব দুস্কৃতকারীদের চিহ্নিত পূর্বক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
মহাদেব দাসের ভাগ্নে চন্দন দাস বলেন, বুধবার রাতে সবার আগে মামা খাবার খায়। খাবার খেয়েই মামার বমি শুরু হয়। ধীরে ধীরে আরও বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন মামা। পরে আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ওই রাতে বাড়িতে আর কেউ খাবার খায়নি। এর আগেও পার্শ্ববর্তী মসনী গ্রামে বিস মেশানো খাবার খাইয়ে সাংবাদিকের বাড়ির সব লুটে নেয় দুর্বৃত্তরা। প্রায় এক সপ্তাহ চিকিৎসার পরে ওই সাংবাদিক পরিবারের ৪ সদস্য সুস্থ্য হন।
বাগেরহাট সদর থানার আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোঃ মিরাজুল করিম বলেন, বিষাক্ত খাবার খেয়ে অসুস্থ্য অবস্থায় প্রথমে চারজন এবং পরে আরও একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। এদের মধ্যে বয়স্ক এক ব্যক্তির অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় আমরা তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করি। অন্য চারজন এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আমরা তাদেরকে পর্যবেক্ষনে রেখেছি।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, খুলনা নেওয়ার পথে সুবোধ দাস নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বাগেরহাট সদর হাসপাতালে প্রেরণ করব। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
তিনি আরও বলেন, রাতের খাবার খাওয়ার পরেই তারা অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। তবে নিহত সুবোধের বাড়ি থেকে কোন মালামাল চুরি বা খোয়া যায়নি।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি