বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর বাদশা‘র বিরুদ্ধে বস্তা থেকে ভিডাব্লিউবি (ভালনারেবল উইমেন বেনেফিট)‘র চাল আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। সোমবার (৮ মে) দুপুরে মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম তারেক সুলতান মোরেলগঞ্জ উপজেলার কাকড়াতলী বাজারে অবস্থিত জিউধরা ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তদন্ত শুরু করেন।
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, চকিদার, স্থানীয় নাগরিক ও উপকারভোগীদের সাথে কথা বলার পাশাপাশি সবার সামনে গুদামে থাকা চাল পরিমাপ করেন। ১০৪০টি বস্তার মধ্য থেকে ৮৫ টি চালের বস্তা পরিমাপ করা হয়। প্রতিটি বস্তা ৩০ কেজি চাল থাকার কথা থাকলে মাত্র ২০টি বস্তায় ৩০ কেজি চাল পাওয়া গেছে। ৬৫টি বস্তায় ২৪ কেজি থেকে ২৯ কেজি পর্যন্ত চাল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৪৪টি বস্তায় ছিদ্র করে চাল বের করে নেওয়ার প্রমান রয়েছে এবং অবশিষ্ট ২১টি বস্তায় ছিদ্র না থাকলেও চাল কমছিল। এ বিষয়ে আরও তদন্ত, পর্যালোচনা এবং উর্দ্বোতন কর্তৃপক্ষের নির্দেষ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম তারেক সুলতান।
তিনি বলেন, ১০৪০টি বস্তার মধ্যে আমরা ৮৫টি বস্তা পরিমাপ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫টি বস্তায় চাল কম পাওয়া গেছে। চাল সরবরাহ থেকে শুরু করে পরিবহন, বিতরণ সব বিষয় গভীরভাবে ক্ষতিয়ে দেখে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
তদন্তের সময় উপস্থিত থাকা জিউধরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য সাইদুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে রাতের আধারে বস্তায় বোমা কাটা (বস্তা ফুটা করার এক ধরণের সিক) মেরে চাল নামিয়ে রেখেছে। বস্তা ভেদে ৩ কেজি থেকে ৬ কেজি পর্যন্ত চাল কম রয়েছে। আমরা সদস্যরা বিষয়টির প্রতিবাদ করলে সে ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলামসহ অন্যান্যদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আজকে তো প্রমান হল, চাল কম দিয়ে চেয়ারম্যান আত্মসাত করেছেন।
চাল আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছেন ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর বাদশা বলেন, গুদাম থেকেই বস্তায় চাল কম দিয়েছে। আমি কোন দূর্নিতির সাথে জড়িত নই। চাল চুরির তো প্রশ্নই আসে না। আমার কয়েকজন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এই ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
এর আগে বুধবার (০৩ মে) বেলা ১১টায় কাকড়াতলী বাজারে অবস্থিত জিউধরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে চাল বিতরণের সময় এই অভিযোগ তোলেন কয়েকজন ইউপি সদস্য। তখন বস্তায় চাল কম থাকায় উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ বন্ধ করে গুদামে তালা মেরে দেন সরকারি ট্যাগ অফিসার উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোঃ মনিরুল ইসলাম। ইউপি সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে তখন তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।
খুলনা গেজেট/ এসজেড