খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, রাজি পাকিস্তান; ভারতের ম্যাচ দুবাইয়ে : বিসিবিআই সূত্র
  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে

বাগেরহাট-পিরোজপুর জেলার সীমানা বিরোধে উত্তেজনা, পুলিশ মোতায়েন

নিজস্ব প্রতিবেদক,বাগেরহাট

বাগেরহাট ও পিরোজপুর জেলার সীমান্তবর্তী কালীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন চরবানিয়ারি ও উমাজুড়ি এলাকার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দুই এলাকার মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বুধবার (০৮ জুন) সকালে নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের লোকজনের দখলের হুমকী প্রতিরোধ করতে সন্তোষপুরের লোকেরা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। চিতলমারী উপজেলার সন্তোষপুর ও নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের কয়েকশ লোক সীমানার দুই পাশে অবস্থান নেয়। দুই পক্ষের সংঘর্ষ এড়াতে সীমানার দুই পাশে নাজিরপুর ও চিতলমারী থানা পুলিশের দুটি দল অবস্থান করছে।

সন্তোষপুর ইউনিয়নের উমাজুড়ি এলাকার লোকজনের অভিযোগ, দীর্ঘ ৩০-৩৫ বছর বলেশ্বর নদীর পাড়ে উমাজুড়ি ও চরবানিয়ারি মৌজায় আমরা বসবাস করে আসছি। কিন্তু দুই জেলার সীমানা জটিলতার অজুহাতে নাজিরপুর উপজেলার কিছু প্রভাবশালী লোক উমাজুরি ও চরবানিয়ারি এলাকার শতাধিক পরিবারকে উচ্ছেদের পায়তারা করে আসছে। মাটিভাঙ্গা এলাকার লোকদের হুমকীতে কিছুদিন ধরে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে উমাজুড়ি ও চরবানিয়ারি এলাকার লোকজন।

সন্তোষপুর ইউনিয়নের ৭ নং (উমাজুড়ি) ওয়ার্ডের সদস্য আবু বকর শেখ বলেন, চিতলমারী উপজেলার কালিগঞ্জ ব্রিজের উত্তরপারে চরবানিয়ারি ও উমাজুড়ি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট জেলার শতাধিক পরিবার বসবাস করে আসছে। কিন্তু সীমানা নিয়ে নাজিরপুর এলাকার লোকদের সাথে একটি বিরোধ রয়েছে। এরজন্য তারা বারবার আমাদের উপর হামলা করে। ১৯৯৫ সালে একশ ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে তারা। পরবর্তীতে কয়েকবার আমাদের লোকজনের উপর হামলা করেছে তারা। এসব বিরোধ নিরসনে কয়েকবার দুই জেলা ও উপজেলার উর্দ্ধোতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মেপে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। সবার সম্মতিতে চরবানিয়ারি মৌজায় মুজিবর রহমান শামীমের ইটভাটার মাজখানে সীমানা পিলার দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী সবাই যেযার সীমানায় ভোগ দখল করে আসছিল। কিন্তু জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের একটি আদেশের প্রেক্ষিতে ০১ জুন একটি সার্ভেটিম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে। নাজিরপুর এলাকার প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে জমি পরিমাপ করে চিতলমারী উপজেলাধীন ১৭ নং উমাজুড়ি মৌজার মাঝে সীমানা পিলার স্থাপন করে যায়। যা অত্যন্ত অন্যায়। জরিপ টিম যে সীমানা পিলার স্থাপন করেছেন, তাতে উমাজুড়ি এলাকার অন্তত ৭০টি পরিবার নাজিরপুর এলাকার মধ্যে পড়েছে। এই সীমানা পিলার স্থাপনের পর থেকে নাজিরপুর এলাকার বাবুল ও কেরামতসহ বেশকিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ওই ৭০টি পরিবারকে উচ্ছেদের হুমকী দিচ্ছে। রাতে এসে ঘর-বাড়িতে হামলাও করছে নাজিরপুরের লোকজন। আসলে সীমানা বিরোধ থাকলে এটার সমাধান রয়েছে। এভাবে হামলা ভয়ভীতি কোন সমাধান হতে পারে না। আমরা চাই দুই জেলার উর্দ্ধোতন কর্মকর্তারা বসে সীমানা নির্ধারণ করে দিক। তাতে এলাকার লোকজন শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।

স্থানীয় রহমত বাওয়ালী বলেন, আমরা ৩০ থেকে ৩৫ বছর এখানে বসবাস করে আসছি। এই স্থানের জমির রেকর্ডসহ সকল কাগজপত্র আমাদের নামে। তারপরেও নাজিরপুর এলাকার লোকজন এসে আমাদের উপর অত্যাচার করে। আমরা কোথায় যাব।

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, সীমানা বিরোধ নিয়ে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলেছি। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি। উভয় উপজেলার লোকদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, সীমানা বিরোধ নিয়ে উত্তেজনার খবরে দুই উপজেলার সীমানায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ভূমি জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়কে জানানো হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া সীমানা যেখানেই হোক জমির মালিকানা একই থাকবে বলেও জানান।

 

 

খুলনা গেজেট/ আ হ আ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!