সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সাবেক বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় বৃহষ্পতিবার (২১ জানুয়ারি) বিকেল সোয়া তিনটা পর্যন্ত আসামীপক্ষ আংশিক যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আগামি ২৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুমায়ুন কবীরের আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে পরবর্তী এই দিন ধার্য করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন বাংলাদেশের অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর, সহকারি এটর্ণি জেনারেল শাহীন মৃধা, সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ, সাবেক পিপি অ্যাড. ওসমান গণি, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, সাবেক পিপি অ্যাড. তপন কুমার দাস, সাবেক অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. আজাহার হোসেন, অ্যাড. শহীদুল ইসলাম পিন্টু, ঢাকা জজ কোর্টের অ্যাড. আব্দুল গফফার, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. সৈয়দ জিয়াউর রহমান বাচ্চু, অ্যাড. ওকালত আলী, অ্যাড. নাজমুন্নাহার ঝুমুর, অ্যাড. জিয়াউর রহমান জিয়া, অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান শাহনাজ প্রমুখ।
আসামীপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন বাংলাদেশ হাইকোর্টের অ্যাড.শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাড. আব্দুল মজিদ(২), অ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাড. তোজাম্মেলল হোসেন তোজাম, অ্যাড কামরুজ্জামান ভুট্টো প্রমুখ।
বৃহষ্পতিবার সকাল সোয়া ১১টায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আব্দুল মজিদ একজন সাক্ষীর জবানবন্দির সঙ্গে অপর সাক্ষীর জবানবন্দির গড়মিল, রাস্তা আড় করে দেওয়া যাত্রীবাহী বাসে কখনো যাত্রী না থাকা আবার কখনো ৩৫ জন যাত্রী থাকা, কয়েকজন সাক্ষী হামলার ১০ মিনিট আগে কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসে অবস্থান করার কথা বললেও তারা শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে ছিলেন বলে একজন সাক্ষী জবানবন্দি দেওয়া, বাসটি সরসকাটি থেকে চাঁন্দুড়িয়া রুটের বলা হলেও চালক নজিবুল্লাহ সাক্ষীতে যাত্রীসহ বাসটি নিয়ে তিনি ওই দিন সকাল ১১টার দিকে সাতক্ষীরা থেকে যশোরে যাচ্ছিলেন বলে উল্লেখ করাসহ বিভিন্ন গড়মিল তুলে ধরেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সম্পুরক অভিযোগপত্রে ঘটনাস্থলের আশে পাশে কমপক্ষে ১৪টি দোকান থাকলেও তাদের কাউকে সাক্ষী করেননি বলে আদালতকে অবহিত করেন। সর্বপরি তিনি এ মামলাকে একটি রাজনৈতিক মামলা হিসেবে দাবি করেন।
প্রসঙ্গত ঃ ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষিতা এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে আসেন। হাসপাতাল থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরার কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ ওঠে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ৭০/৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জনকে স্বাক্ষী করে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শেখ সফিকুল ইসলাম।
কাঠগড়ায় ৩৪ জন আসামীর উপস্থিতি ও আসামীপক্ষের যুক্তিতর্কের জন্য আগামি মঙ্গলবার ২৬ জানুয়ারি ধার্য দিন এর বিষয়টি নিশ্চিত করেন মুখ্য বিচারিক হাাকিম আদালতের পেশকার মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম।
খুলনা গেজেট/এ হোসেন