যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় কর্মসূচির আলোকে খুলনা জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি ভবন ও প্রতিষ্ঠানে সঠিক মাপ ও রঙের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গল্লামারী শহিদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং বয়রাস্থ মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে একত্রিশবার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সূচনা করা হবে। সকাল সাড়ে আটটায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে বিভাগীয় কমিশনার আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হবে। একই স্থানে তিন দিনব্যাপী আড়ম্বরপূর্ণ বিজয়মেলা আয়োজন করা হবে। বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএ রকেট ঘাটে নৌ-বাহিনীর জাহাজ জনসাধারণের দর্শনের জন্য সকাল নয়টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উন্মুক্ত রাখা হবে। রেল, স্টিমার, লঞ্চ ও জাহাজ সজ্জিত করা হবে। সুবিধাজনক সময়ে জেলা ও উপজেলা সদরে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, নৌকা বাইচ, ফুটবল ও হাডুডু খেলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। সুবিধাজনক সময়ে শহিদ হাদিস পার্ক, শিববাড়ি মোড়, দৌলতপুর শহিদ মিনার, রূপসা মোড়, গল্লামারী মোড়, খালিশপুর মোড়সহ উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
১৬ ডিসেম্বর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা টিকিটে সিনেমা হলসমূহে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক সরবরাহকৃত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সংক্রান্ত আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হবে। শহিদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত, মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সু স্বাস্থ্য এবং জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বাদযোহর বা সুবিধাজনক সময়ে সকল মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। দুপুরে হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠানসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হবে।
শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকাসহ বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও রঙিন নিশান দ্বারা সজ্জিত করা হবে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গিলাতলা শিশুপার্ক, খুলনা রিভারভিউ পার্ক, বয়রা শিশুপার্ক, লিনিয়ার শিশুপার্ক, উল্লাস বিনোদন পার্ক ও খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশুপার্কসহ সকল পার্ক বিনাটিকেটে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত রাখা এবং পর্যটন কেন্দ্রে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। বিনা টিকিটে খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর ও ফুলতলার দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
বিজয় দিবসে বিকাল সাড়ে তিনটায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে কেসিসি বনাম জেলা প্রশাসন একাদশের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। সুবিধাজনক সময়ে শিশু একাডেমি শিশুদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। সুবিধাজনক সময়ে পূর্ব রূপসাঘাটে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীনের মাজার প্রাঙ্গণে তাঁর বীরত্ব ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল সাড়ে চারটায় শিশুদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, আবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এছাড়া, কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কবিতা আবৃত্তির আয়োজন করা হবে।
ঐদিন নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ নিবন্ধ, সাহিত্য-সাময়িকী ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। মাসব্যাপী বাংলাদেশ বেতার খুলনা মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসভিত্তিক অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনসমূহে আলোকসজ্জা করা হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম

