জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, এবারের নির্বাচন ১৪, ১৮ ও ২৪ এর মত হলে জাতির ভাগ্যে চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন। আগামী নির্বাচন স্বচ্ছ করুন। প্রত্যেক প্রার্থী যেন সমান সুযোগ পেয়ে নির্বাচনী কাজ করতে পারেন। অতীতে যারা কোন বিশেষ দলের পক্ষে কাজ করেছেন, সেই ওসি, এসপিরা সব পালিয়ে গেছে। তারা এখন ট্রাইব্যুনালে হাজির। প্রধান বিচারপতি পালিয়ে গেছে। বায়তুল মোকাররমের খতিব পালিয়ে গেছে। ডিআইজি পালিয়ে গেছে। পুলিশ কমিশনার পালিয়ে গেছে। ওসিরা চাকুরি ছেড়ে বর্ডার দিয়ে ইন্ডিয়া চলে গেছে। আপনাদের বিরুদ্ধেও যদি সেই অভিযোগ আসে আপনারা কিন্তু পালানোর পথ পাবেন না।
নির্বাচনকে কালো টাকার প্রভাবমুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, যারা অতীতে ঘের দখল করেছে, মন্দির ভেঙেছে এবার জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দিয়ে শান্তিতে থাকার জন্য দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেয়ার শপথ করেছে। কর্তৃত্বববাদী সরকারের কালো যুগ পেরিয়ে আমরা আজ এক নতুন বাংলাদেশের পথে। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। ৫৪ বছরে অনেক দল ও মার্কা দেখেছি। নৌকা, লাঙ্গল, ধানের শীষ দেখেছি। প্রতিটি শাসনে দুর্নীতি হয়েছে, লুটপাট হয়েছে, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের ব্যবস্থা হয়নি। সুতরাং মানব রচিত বিধান দিয়ে দেশ পরিচালিত হলে দেশে শান্তি আসতে পারে না এটি প্রমাণিত। তাই আসুন আগামীতে কুরআনের রাষ্ট্র গড়ি।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সোয়া ৯ টায় মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার উদ্বোধনকালে খুলনার জিরো পয়েন্টের পথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
খুলনা-৫ আসনের (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে এক বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা খুলনার জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে গুটুদিয়া, ডুমুরিয়া, খর্ণিয়া, চুকনগর, আঠারোমাইল, রুদাঘরা, রঘুনাথপুর, শাহপুর, ধামালিয়া, জামিরা, ফুলতলা, দামোদর হয়ে শোভাযাত্রাটি শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত পথসভার মধ্য দিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় ৫ সহস্রাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে সাধারণ জনগণ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। উৎসবমুখর পরিবেশে এ শোভাযাত্রা গোটা ডুমুরিয়া ও ফুলতলাসহ খুলনা জেলা দাঁড়িপাল্লার স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। নেতাকর্মীদের মাঝে ছিল ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। এ সময় রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে থাকা গ্রামবাসী মিয়া গোলাম পরওয়ারকে উন্নয়নে কারিগর বলে স্লোগানের জবাব দেন। মিয়া গোলাম পরওয়ার তাদেরকে উদ্দেশ করে জাতীয় পতাকা নিয়ে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় তিনি বলেন, সুশাসন ও শান্তির জন্য পরিবর্তন, উন্নত ও আধুনিক খুলনা গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা সর্বস্তরের মানুষের কাছে পরিবর্তনের এ বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই আজকের এই আয়োজন। সুখে-দুঃখে মানুষের কল্যাণে আমরা সবসময় আছি এবং দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে এ ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। দীর্ঘ বছরের পর বছর ধরে আমাকে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম করতে দেওয়া হয়নি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরে আমরা স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম করতে পারছি আলহামদুলল্লিাহ।
খুলনার জিরো পয়েন্টের পথ সভায় সভাপতিত্ব করেন হরিণটানা থানা আমীর জি এম আব্দুল গফুর। বক্তৃতা করেন খুলনা-১ আসনের (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা শেখ মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও গাউসুল আযম হাদী, শেখ সিরাজুল ইসলাম, এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, মোস্তফা আল মুজাহিদ, আশরাফুল আলম, খুলনা জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইউসুফ ফকির ও সেক্রেটারি ইলিয়াস হোসাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা মোক্তার হোসেন, ফুলতলা উপজেলা আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলিম, খানজাহান আলী থানা আমীর ডা, সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটো, হরিণটানা থানা সেক্রেটারি এডভোকেট ব ম মনিরুল ইসলাম, মাওলানা হাবিবুর রহমান, গাজী সাইফুল্লাহ, গাজী মোর্শেদ মামুন, মাওলানা সাইফুল হাসান, আব্দুর রশিদ, মোমিনুর রহমান, লিমন, মফিজুর রহমান, আবু তাহের, ইমরান হোসেন, আব্দুস সাত্তার, আল আমিন গোলদার, আলী আকবার মোড়ল, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/এনএম

