ঘেরে ঝুলছে বাহারি রঙের তরমুজ

কৃষকের হৃদয়ে রঙিন স্বপ্নের দোলা

সাগর মল্লিক, ফকিরহাট

বাগেরহাটের ফকিরহাটে মাছের ঘেরের মাচায় ঝুলছে হলুদ, সবুজ ও কালো বর্ণের রঙিন অমৌসুমি তরমুজ। কৃষির এ অভিনব উদ্যোগে দারুণ সাড়া মিলেছে কৃষক ও ভোক্তাদের কাছে। চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে আশপাশের জেলাতেও যাচ্ছে এসব তরমুজ।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আটটি ইউনিয়নে প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে ৮০ জন কৃষক বর্তমানে এভাবে তরমুজ চাষ করছেন। মাছের ঘেরের আইল ও পানির ওপর মাচা তৈরি করায় বাড়তি জমি ব্যবহার করতে হচ্ছে না। আবার উঁচু জমিতে রোপণ করায় অতিবৃষ্টি বা জলাবদ্ধতায় ফসলের ক্ষতিও হচ্ছে না। কৃষি বিভাগ কৃষকদের দিয়েছে বীজ, সার, প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত তত্ত্বাবধান।

নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের কৃষক নিতুল রায় বলেন, “প্রথমবার ঘেরে তরমুজ চাষে খরচ হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি। আশা করছি আরও দেড় লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারব। সাধারণ তরমুজ কেজিপ্রতি ৪৫-৫০ টাকা আর হলুদ রঙের তৃপ্তি জাত কেজিপ্রতি ৯০-১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।”

একই এলাকার কৃষক নিরাপদ বৈরাগী ও বিশ্বজিৎ সরকার জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা এই চাষে যুক্ত হয়েছেন। কীটনাশকমুক্ত হওয়ায় বাজারে এসব তরমুজের চাহিদা বেশি।

ফকিরহাট বাজারে তরমুজ কিনতে আসা শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, “দু-দিন আগে একটি তরমুজ কিনেছিলাম। এত মিষ্টি ও সুস্বাদু লেগেছে যে আজ আবার কিনতে এসেছি।”

মৌভোগ ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস জানান, “অফসিজন তরমুজ লাভজনক ফসল। প্রথমবারেই কৃষকরা ভালো লাভ করছেন। বাজারে এর চাহিদা ও দাম দুটোই বেশি।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “বর্তমানে ফকিরহাটে তৃপ্তি, ফর্মেলো, বিগ ফ্যামিলি ও ছক্কা এই চার জাতের তরমুজ চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে নলধা-মৌভোগ ও লখপুর ইউনিয়নে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তিনি বলেন, “কৃষকদের আগ্রহ দেখে মনে হচ্ছে আগামীতে আরও বেশি জমিতে এই তরমুজ চাষ হবে।”

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন