খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ পৌষ, ১৪৩১ | ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৭৪
  কড়াইল বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে
  টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি

কয়রায় দর্জি কাজ করেই সংসার চলে প্রতিবন্ধী সুমাইয়ার

জি এম রিয়াজুল আকবর, কয়রা

মেলা কষ্ট করে এ গ্রেড পেয়ে এইচএসসি পাশ করেছি। সবসময় বই নিয়ে পড়ে থাকতাম নিজে হাঁটতে পারিনে ঠিক মতো, দেখি লেখা পড়া শিখে একটা চাকুরি পায় কিনা। ঠিক মতো প্রাইভেট ও পড়তে পারিনি। ১৯ সালে হোগলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে খান সাহেব কলেজে এইচএসসি ভর্তি হই পরে ফাইনাল পরিক্ষায় এ গ্রেড পেয়ে এইচএসসি পাশ করি। তারপর পারিবারিকভাবে আমাকে বিয়ে দিয়ে দেয়, পরের বাড়িতে গেলে তারা আমার লেখাপড়া সব বন্ধ করে দেয়। দাম্পত্য জীবনে একটি ছেলে সন্তান হয়। স্বামী আমার কোন খোঁজ খবর নেয় না তাই কোন কূল না পেয়ে ছোট্ট বাচ্চাটাকে নিয়ে ঠাই হয় বাপের বাড়িতে। আব্বার ও নেই তেমন কোন সম্পদ নুন আনতে পান্তা ফুরাই আমাদের। খাব কি কাজকাম তো কোন কিছুই করতে পারিনি। দু’মুঠো ভাত খেয়ে বাচ্চাটা নিয়ে তো একটু বেঁচে থাকবো। তাই কোন কাজ কাম না পেয়ে পাশের বাড়ি থেকে একটু দর্জির কাজ শিখি। একটা সেলাই মেশিন কিনি কাজ করা শুরু করেছি।

এদিকের পাড়াগাঁয়ের লোকজন আমার কাছে থেকে জিনিসপত্র তৈরি করে তাতে টুকটাক যা আয় হয় তাই দিয়ে আমার ও আমার বাচ্চাটা কোন রকম খেয়ে না খেয়ে চলিতেছে আমাগে দেখার কেউ নেই গরিব ঘরে জম্ন কপালে কোনদিন সুখ হলো না। আব্বার বাড়িতে থাকি এখানে আমার থাকার জন্য একটি ঘর নেই। যদি সরকার একটা চাকরি দিতো তাহলে ২ মুঠো ভাত খেয়ে বাঁচতে পারতাম।’

এসব কথাগুলো খুলনা গেজেটকে বলেছিলেন কয়রা উপজেলার বাগালি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হোগলা গ্রামের কালাম মোল্লার কন্যা শারীরিক প্রতিবন্ধী সুমাইয়া খাতুন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বারান্দায় একটি সেলাই মেশিন সেখানেই বসে পোশাক তৈরি করছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী সুমাইয়া খাতুন। এ সময় তার ছোট্ট সন্তানটি তাকে জড়িয়ে ধরে আম্মু আম্মু বলে ডাকছে। এসময় কথা হয় তার কাছে পোশাক তৈরি করতে আসা এক মহিলার সাথে। তিনি বলেন, সুমাইয়া একটা শিক্ষিত মেয়ে ও প্রতিবন্ধী মানুষ আমরা এর কাছ থেকে পোশাক তৈরি করি। বাচ্চাটা নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকে ওর এই সেলাই মেশিনে কাজ করে যা আয় হয় তাই দিয়ে ও বাচ্চাটা নিয়ে চলে। সরকার মেয়েটার যদি একটা চাকরি দিতো তাহলে মেয়েটা একটু ভালোভাবে বাঁচতে পারতো।

কয়রা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, সুমাইয়া খাতুনের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তাকে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!