খুলনা, বাংলাদেশ | ২৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৬ মে, ২০২৪

Breaking News

  ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ স্বতন্ত্র সব পরিচালকের পদত্যাগ
  মিল্টন সমাদ্দারের প্রতারণায় সহযোগী ছিলেন তার স্ত্রী : ডিবি প্রধান
  জনগণের ভরসাস্থল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন সেনাবাহিনী : প্রধানমন্ত্রী

ইছামতির ভয়াবহ ভাঙনে দেবহাটার ভাতশালায় আতংক

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার ভাতশালা এলাকায় ইছামতি নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই বেড়িবাঁধের কিছু অংশ নদী গর্ভে ধসে পড়েছে। সীমান্তের ইছামতির নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হঠাৎ করে বেড়িবাঁধে এই ভাঙন দেখা দেয়। এঘটনায় ভাঙ্গন কবলিত নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারি এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর আওতাধীন ৩ নং পোল্ডারের ভাতশালা এলাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের আন্তর্জাতিক সীমানা নির্ধারণী ইছামতি নদীর বেড়িবাঁধে সম্প্রতি ফাঁটল দেখা দেয়। সোমবার দুপুরের প্রবল জোয়ারের তোড়ে প্রায় বাঁধের প্রায় ১৫০ মিটার এলাকা জুড়ে ভয়াবহ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যেকোন মুহূর্তে বেড়িবাঁধ ভেঙে ইছামতির পানিতে আশপাশের এলাকা প্লাবিত হওয়ার শংকা দেখা দিয়েছে। বেড়িবাঁধে হঠাৎ ভাঙন দেখা দেয়ায় আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েছে নদীর তীরবর্তী এলাকায় বাসবাসকারি মানুষ।

এদিকে, বেড়িবাঁধে ভাঙনের খবর পেয়ে দেবহাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান ও দেবহাটা সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বকুল সোমবার বিকালে ঝুঁকিপূর্ণ ও ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

ইছামতি পাড়ের বাসিন্দা ফেরদৌসী বেগম বলেন, ইতিপূর্বে পাশর্^বর্তী সুশীলগাতি, কোমরপুর ও নাংলা সীমান্তে ইছামতি নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে আশপাশের এলাকা প্লাবিত হয়। প্রতিবারই বেড়িবাঁধ ভাঙলে প্রায় মাসখানেক প্লাবিত এলাকা নদীর পানিতে নিমজ্জিত থাকে। এভাবে যদি বারবার বেড়িবাঁধ ভাঙতে থাকে তাহলে বসতবাড়ি হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে সীমান্তের বাসিন্দাদের।

তিনি ভাতশালার ভাঙন কবলিত এলাকায় জরুরিভাবে কংক্রিটের ব্লক ও বালুভর্তি বস্তা ডাম্পিংয়ের পাশাপাশি নদী ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলেন, বাঁধ ভাঙার আগে কার্যকর পদক্ষেপ নিলে ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচা সম্ভব হবে। কিন্তু পাউবো কর্তৃপক্ষেও খোঁজ নেই। আগে থেকে তারা কোন পদক্ষেপ নেন না।

দেবহাটা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বকুল বলেন, ভাতশালা এলাকায় ইছামতির বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই বেড়িবাঁধের বেশিরভাগ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বাঁধ ভাঙনের ভয়ে আতংকিত এলাকাবাসী অন্যত্র অবস্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলাতির বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকায় পাউবো’র বেড়িবাঁধ সংস্কারে কোন বরাদ্দ হলে সংশ্লিষ্ট সেকশন অফিসারদের (এসও) সাথে ঠিকাদাররা যোগসাজশে দায়সারা গোছের কাজ করে চলে যান। কোন কোন ক্ষেত্রে ঠিকাদারের কাছ থেকে সংস্কার কাজ কিনে নিয়ে পাউবোর এসও’রা নিজে তা লেবার সর্দ্দারের কাছে ফের বিক্রি করে অতিরিক্ত অর্থ পকেটস্থ করেন। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজের সময় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোন তদারকি থাকে না। ফলে বরাদ্দের অধিকাংশ টাকা লোপাট হয়ে যায়। কাজ হয় যৎসামান্য। উপকূলের মানুষের জানমাল রক্ষায় ও বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ সঠিকভাবে করতে তিনি এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

দেবহাটা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও কংক্রিটের ব্লক ডাম্পিংয়ের জন্য সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডে বিভাগ-১ এর সেকশন অফিসার (এসও) সাইদুর রহমান বলেন, ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছি। ভাঙনের মাত্রা তীব্র হওয়ায় কেবলমাত্র কংক্রিটের ব্লক এবং বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে তা রোধ করা কষ্টসাধ্য। মূলত ভাঙন কবলিত এলাকাটিতে নতুন করে বিকল্প রিং বাঁধ দেয়া প্রয়োজন। কিন্তু স্থানীয়রা রিং বাঁধ নির্মাণের পক্ষে মতামত দিচ্ছেন না। তবুও শীঘ্রই বালুর ব্যাগ ও ব্লক ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!