বাগেরহাটের মোংলায় প্রতিবেশীদের ভয়ে কলেজ ছাত্রীসহ দুই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অসহায় এক মা। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মারধর ও প্রাণ নাশের হুমকীর ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েও বাড়ি ফিরতে পারছেন না মোংলা পৌরসভার মাদরাসা রোডের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাকের পরিবার। সোমবার বিকেলে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন আব্দুর রাজ্জাকের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে মোসাঃ সুরাইয়া আক্তার (২১)।
তিনি বলেন, শনিবার (২৬ মার্চ ) সন্ধ্যায় আমার ছোট বোন মোসাঃ অমি আক্তার (০৮) তার গৃহ শিক্ষককে ডাকতে বাইরে যায়। এ সময় পূর্ব শত্রুতার জেরে আমাদের প্রতিবেশী ইছাহাক গাছি (৫৫) ও তার ছেলে মোঃ লাভলু গাছি (২৩) আমার ছোট বোনকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। গালিগালাজের কারণ জানতে চাইলে আমাকে ও আমার মাকেও গালিগালাজ করে মারতে আসে। আমরা প্রাণ ভয়ে ছোট বোনকে নিয়ে বাড়ির মধ্যে চলে আসি।
পরে রবিবার (২৭ মার্চ) রাত পৌনে ৯টার দিকে বাসার সামনে দাড়িয়ে মুঠোফোনে কথা বলার সময়, ইছাহাক গাছি ও মোঃ লাভলু গাছিসহ ৭-৮ জন আমাকে মারধর করে তাদের বাসার মধ্যে নিয়ে যায়। আমার গলায় থাকা আট আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায় তারা। আমার চিৎকার শুনে স্থানীয় নাজমা বেগম, টুলু বিথিসহ কয়েকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্যে কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরবর্তীতে আমরা মোংলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লাভলুর নানা অপরাধের সহযোগি স্থানীয় সন্ত্রাসী জলিল শিকদার ওরফে টাইগার জলিল আমাদের পরিবারের সকলকে মেরে ফেলার হুমকি-ধামকি দেয়। মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রাম ছাড়া করার কথাও বলে তারা। এই মুহুর্তে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
কলেজ শিক্ষার্থী মোসাঃ সুরাইয়া আক্তারের মা নাজমা বেগম বলেন, আমার স্বামী ঢাকায় চাকুরী করেন। দুই মেয়ে নিয়ে আমি বাড়িতে থাকি। কিন্তু টাইগার জলিল ও মোঃ লাভলু গাছির অত্যাচারে এখন বাড়িতে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তারা আমার মেয়েকে নানা সময় উত্ত্যক্ত করেছে। মারধরও করেছে আমার মেয়েকে। আমি বাড়ি গেলেই তারা আমাকে মেরে ফেলবে। মেয়েদের নিয়ে এক ধরনের পলাতক জীবন যাপন করছি আমি। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা জলিল শিকদার ওরফে টাইগার জলিল বলেন, ইছাহাক গাছি ও মোঃ লাভলু গাছিকে আমি ভালভাবে চিনিও না। রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই নারী আমার বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় দুই পক্ষের কাছ থেকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া পালিয়ে বেড়ানোর বিষয়ে তারা আমাকে কোন কিছু অবহিত করেননি।
খুলনা গেজেট/কেএ