খুলনা মহানগরীর আটরা-গিলাতলা এলাকায় শরীফা প্রিন্টার্স এন্ড প্যাকেজার্স প্রাইভেট লিমিডেটের বাউন্ডারির মধ্যে ঝুলবারান্দা নির্মাণ করছেন প্রতিবেশী এলজিআরডি’র প্রকৌশলী মোঃ জিয়াউদ্দীন। কেডিএ’র অনুমোদন ও বৈধ নকশা ব্যতীত নির্মাণাধীন ভবনের বর্ধিত অংশ চলে আসছে বাণিজ্যিক কারখানার বাউন্ডারির মধ্যেই। এছাড়া রপ্তানিমুখী হিমায়িত মৎস্য মোড়কীকরণ উৎপাদক প্রতিষ্ঠানটির বাণিজ্যিক ব্যবহার্য্যে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ৩৩ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তার ঘেঁষে চলছে নির্মাণ কাজ। এতে যেকোন সময় ঘটতে পারে জীবনহানীসহ বড়ধরণের দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শরীফা প্রিন্টার্স এন্ড প্যাকেজার্স প্রাইভেট লিমিডেটের প্রবেশদ্বারে চারতলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন বর্ধিত করছেন মৃত মোঃ আফতাব উদ্দীনের ছেলে এলজিআরডি’র প্রকৌশলী মোঃ জিয়াউদ্দীন। কেডিএ’র নিয়মানুযায়ী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পাশেই আবাসিক ভবন নির্মাণে মাঝখানে নূন্যতম দুরত্ব তো দুরের কথা ভবনের বর্ধিত অংশ কোম্পানীর সীমানা প্রাচীর ঘেষে নির্মাণ কাজ চলছে। ফলে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত নোংরা পানি, বালুু, সিমেন্ট, রডসহ নির্মাণ সামগ্রী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পড়ছে। নির্মাণ কাজের জন্যে ভারা বা মাঁচায় বাঁশের খুঁটি বাঁধা হয়েছে ৩৩ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তার ঘেঁষেই।
শুধু তাই নয়, নির্মাণ কাজের নামে সম্পূর্ণ বিনাঅনুমতিতে কোম্পানীর সাব-স্টেশন হিসেবে ব্যবহৃত একতলা ভবনের ছাদে নির্মাণ শ্রমিক অহরহ যাতয়াত করছে। নির্মাণ সামগ্রী রাখাসহ রড ও সেনটারিংয়ের কাঠ, লোহার সীট রাখছে। অসাবধানবশত নির্মাণ শ্রমিকদের কর্মকান্ডের ফলে ভবনের বর্ধিত অংশের পাশ ঘেঁষে কোম্পানীর ১১ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক সঞ্চালন তার ও ট্রান্সফরমার সংস্পর্শে যেকোন মূহুর্তে বড়ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এসকল বিষয়ে মৌখিকভাবে আবাসিক ভবন মালিক প্রকৌশলী মোঃ জিয়াউদ্দীন, কেয়ারটেকার তার ভগ্নিপতি মাহবুবার রহমান চঞ্চলকে বারবার জানিয়েও সমস্যাটির কোন সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ শরীফা প্রিন্টার্স এন্ড প্যাকেজার্স (প্রাঃ) লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক অনিমেষ কান্তি নন্দীর।
তিনি বলেন, আবাসিক ভবনের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা স্বার্থেই বাণিজ্যিক এলাকা থেকে কিছুটা দুরত্ব বজায় রাখা উচিত। তারা দুরত্ব তো রাখছেনই না, বরং ঝুল বারান্দা নির্মাণ করছেন কোম্পানীর বাউন্ডারীর কয়েক ইঞ্চি মধ্যে এসে। এছাড়া উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বৈদ্যুতিক তারে জীবনহানীসহ মুহুর্তেই ঘটে যেতে পারে অপূরণীয় দুর্ঘটনা। এসব বিষয়ে বিনয়ের সাথে তাদের বলতে গেলেও কোম্পানীর কর্মকর্তাদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করছেন প্রকৌশলী মোঃ জিয়াউদ্দীনের ভগ্নিপতি মাহবুবার রহমান চঞ্চল। কর্মকর্তাদের নানাভাবে হুমকিও দিচ্ছেন তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে প্রকৌশলী মোঃ জিয়াউদ্দীনের ব্যবহৃত মোবাইলে (০১৭১৬ ৭৪৮১৪৩) কয়েকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে কেডিএ‘র অথরাইজড অফিসার মোঃ মুজিবর রহমান বলেন, খুলনা থেকে নওয়াপাড়া রেল ক্রসিং পর্যন্ত কেডিএর সীমানা। এরমধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে অবশ্যই কেডিএ থেকে নকশা অনুমোদন নিতে হবে। নকশা বর্হিভূতভাবে এধরনের ভবন নির্মাণ করলে অবশ্যই কেডিএ ব্যবস্থা নেবে।
প্রসঙ্গত্ব, রপ্তানিমুখী হিমায়িত মৎস্য মোড়কীকরণে দেশের সুপ্রতিষ্ঠিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান শরীফা প্রিন্টার্স এন্ড প্যাকেজার্স প্রাইভেট লিমিটেড দীর্ঘদিন উৎপাদন কার্যক্রম সুনামের সাথে পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটিতে স্থায়ী-অস্থায়ী তিনশতাধিক নারী-পুরুষ শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা রয়েছেন। সারাদেশের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের বিপরীত চিত্র এই প্রতিষ্ঠানটিতে; করোনাকালে শ্রমিক ছাঁটাই না করে নতুন করে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে কোম্পানীটি। এছাড়া করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া বিপুল জনগোষ্ঠিকে দফায় দফায় মানবিক সহায়তায় খাদ্য ও নগদ অর্থ প্রদান করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার।
খুলনা গেজেট/এআইএন