খুলনার ডুমুরিয়ায় ভদ্রা নদীর উপর নির্মিত শোভনা-খর্ণিয়া ইউনিয়নের সংযোগ প্রায় দুই শত ফুট কাঠের সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। যে কোন মুহূর্তে এটি নদীগর্ভে ভেঙ্গে পড়ে দু’পারের যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। ঝুঁকির মধ্য দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে যানবাহনসহ জনসাধারণের। আশু এ সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
তবে অচিরেই এ নদীতে একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণ হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২ বছর পূর্বে এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে ডুমুরিয়ার ভরাটকৃত ভদ্রা নদী খনন করা হয়। ওই নদীর উপর দিয়েই ছিল খর্নিয়া ইউনিয়নের ভদ্রদিয়া গ্রাম হয়ে-শোভনা ইউনিয়নে যাতায়াতের কার্পেটিং করা পিচের রাস্তা। কিন্তু পাউবো বিকল্প কোন ব্যবস্থা না করে পাকা সড়কটি বিচ্ছিন্ন করে নদী খনন করা হয়। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চরম দূর্ভোগে পড়ে দ ‘পারের বাসিন্দারা।
এ ছাড়া সবজি ও মাছ উৎপাদনে খ্যাত শোভনার কৃষকরা পড়ে যায় দারুন দুঃশ্চিন্তায়। কারণ এসব উৎপাদিত ফসল একমাত্র ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন খর্নিয়া হয়ে খুলনা, যশোর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সমাজসেবক সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছ থেকে বাঁশ, গাছ ও নগদ অর্থ অনুদান নিয়ে ওই খননকৃত নদীতে নির্মাণ করা হয় প্রায় ২ শত ফুট লম্বা ও ৮ ফুট চওড়া একটি কাঠের সেতু। যা দিয়ে ভ্যান,মোটর সাইকেল, ইজিবাইকসহ জনসাধারণ যাতায়াত করে আসছে। কিন্তু এক শ্রেণীর নসিমন, করিমন, আলমসাধু রাতের আঁধারে ভারি মাল বোঝাই করে যাতায়াত করায় সম্প্রতি ওই সেতুটির বিভিন্ন স্থানে ধসে পড়ায় বর্তমানে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেও পারাপার হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলছে মানুষ। যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
এ বিষয়ে কথা হয় শোভনা এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান সরদার আব্দুল গনি, শিক্ষক হাফিজুর রহমান, ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান, কৃষক ইসমাইল হোসেন, খোদাবক্স শেখসহ অনেকের সাথে । তারা মিলিয়ে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি কেটে দেয়ায় আমরা শোভনাবাসী উন্নয়ন থেকে খানিকটা বঞ্চিত। তারপরও পারাপারের জন্য একটা কাঠের ব্রিজ ছিল সেটাও ভেঙ্গে পড়ছে। আমাদের এখন দুঃখ দুর্দশার শেষ নেই।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত কুমার বৈদ্য বলেন, বিষয়টি শুনেছি। পরিদর্শন করে অতি শীঘ্রই সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।
এ প্রসঙ্গে খুলনা পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, খননকৃত ভদ্রা নদীতে ব্রিজ নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি পাঠিয়েছি। অনুমোদন হলে কাজ শুরু হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই