খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চাওয়াই নদীতে গোসলে নেমে প্রাণ গেল দুই শিশুর
  গরুবাহী নছিমনের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত
  জামালপুরে ধান মাড়াই করতে গিয়ে তাঁতী লীগ নেতার মৃত্যু
  দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় স্টার সী ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোনালী ব্যাংক খুলনা কর্পোরেট শাখার সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় মেসার্স স্টার সী ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: সালাউদ্দিনকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (২ আগষ্ট) খুলনা মহানগর বিশেষ দায়রা জজ মাহমুদা খাতুন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে তিনি আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করেন।

এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী আবুল কালাম আজাদ।

আদালত সূত্রে  জানা গেছে, মামলার পর থেকে সালাউদ্দিন পালিয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত থেকে তিনি ৬ সপ্তাহের জামিন নেন। আজ সে জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি আদালতে জামিনের আবেদন করলে তা না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, স্টার সী ফুড ১৯৭৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১ কোটি টাকা। হিমায়িত মৎস্য প্রক্রিয়াকারক ও রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান স্টার সী ফুড সোনালী ব্যাংক লি: এর নিয়মিত গ্রাহক ছিল। পূর্বে বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানটি প্লেজ লোন নিয়ে ব্যবসা করত। ২০১৫ সালের পূর্বে তাদের এ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া ছিল।

২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর উক্ত ঋণ পূণ: তফসীলকরণ, নবায়ন/ ঋণ মজ্ঞুরসীমা ১ বছর বৃদ্ধির জন্য স্টার সী ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাউদ্দিন আবেদন করেন। আর আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৭ কোটি টাকা হাইপো ও ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। ঋণের মূলধন জামানত ছিল স্টার সী ফুড ইন্ডট্রিজের প্লেজ গোডাউনে রক্ষিত মাছ।

মাছ বিদেশে রপ্তানী করে টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল স্টার সী ফুড কোম্পানীর। কিন্তু খোলা বাজারে মাছ বিক্রির কোন সুযোগ ছিলোন। এ কারণে ব্যাংক থেকে একজন গোডাউন কিপার নিয়োগ করা হয়। তার কাছে গোডাউনের চাবি থাকার কথা। কিন্তু ২৭২ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর স্টার সী ফুড মালিক কোম্পানীতে রক্ষিত মাছ বিদেশে রপ্তানী করতে পারেনি। এরপর ব্যাংক থেকে ঋণের টাকা পরিশোধ করার জন্য সালাউদ্দিনকে চাপ দিতে থাকে।

গোডাউন কিপার মো: আ: মান্নান হাওলাদার ও চৌকিদার মো: আ: রহিম বাবু গোপনে মাছ বিক্রির পরিকল্পনা করে। তারা দু’জনে গোডাউন খুলে বাইরে মাছ বিক্রি করতো। কিন্তু পরবর্তীতে পাহারাদার আশফাকুর রহমান বাবু সে পরিকল্পনায় বাঁধ সাধে।

এজাহার থেকে আরও জানা গেছে, ২০১৭ সালের রাত ১০ টার দিকে স্টার সী ফুড কর্মকর্তা সুমনসহ কোম্পানীর আরও তিন জন লোক আরও ১০ জন লেবার গেট খুলে মাছ বের করে নেওয়ার চেষ্টা করে। পাহারাদার বাবু বাধা দিলে তারা তার কথা না শুনে রাত আড়াইটার দিকে ট্রলারযোগে মাছ নিয়ে চলে যায়। ওই সময়ে গোডাউন কিপার মান্নান হাওলাদার এসে বাবুকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে গোডাউন কিপার মান্নান হাওলাদার সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা খুলনার ডিজিএমকে মাছ চুরির ঘটনাটি অবহিত করে। ওই দিন মাছ চুরির ঘটনায় থানায় মামলা হয়।

পরবর্তীতে এ অভিযোগের বিষয়ে দুদক প্রধান কার্যালয় ঢাকা থেকে অনুসন্ধানের জন্য অনুমতি আসলে উক্ত অনুসন্ধানের জন্য ২০১৮ সালে ২৮ মে দুনীতি দমন কমিশন বিভাগীয় কার্যালয় খুলনার উপ পরিচালক মো: শাওন মিয়া কে অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়।

২০২১ সালের ১১ আগস্ট বাদী হয়ে তিনি খুলনা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে ৩ জনের নামে মামলা দায়ের করেন যার নং ৯। মামলার আসামিরা হলেন, স্টার সী ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: সালাউদ্দিন , গোডাউন কিপার মো: আ: মান্নান হাওলাদার ও সার্পোটিং স্টাফ সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখার মো: আ: রহিম বাবু।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!