খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চাওয়াই নদীতে গোসলে নেমে প্রাণ গেল দুই শিশুর
  গরুবাহী নছিমনের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত
  জামালপুরে ধান মাড়াই করতে গিয়ে তাঁতী লীগ নেতার মৃত্যু
  দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

সাগর-রুনী ও ত্বকী হত্যার বিচারের দাবিতে খুলনায় সুজন’র মানববন্ধন

গেজেট ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী তরুণ তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যারা একদশক পূর্তি ছিল সোমবার। কিন্তু একদশকেও ত্বকী হত্যার চার্জশীট দাখিল করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা। আবারো পিছিয়েছে সাংসাদিক সাগর-রুনি হত্যার অভিযোগপত্র দাখিলের সময়। অবিলম্বে ত্বকী ও সাংবাদিক সাগর-রুনী হত্যার চার্জশীট দাখিলের দাবিতে সোমবার বেলা ১১টায় সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন খুলনা মহানগর ও জেলা এবং খালিশপুর থানা শাখার যৌথ উদ্যোগে পিপলস গোলচত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়।

সুজন খালিশপুর থানা কমিটির সভাপতি ডাঃ সৈয়দ মোসাদ্দেক হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে সম্পাদক খলিলুর রহমান সুমনের পরিচালনায় মানববন্ধনে অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সুজন জেলা কমিটির সম্পাদক নাগরিক নেতা এড. কুদরত ই খুদা, সুজন বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান রঞ্জু, পেইভ খালিশপুরের সমন্বয়কারী নিজামুর রহমান লালু, হাঙ্গার প্রজেক্টের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার রুবিনা আক্তার। অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন সুজন খালিশপুর থানা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব তাহেরুল আলম চৌধুরি, সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম অভি, তৈয়েবুর রহমান, আশরাফ হোসেন, অবকাশ গণগ্রন্থগারের সাঃ সম্পাদক খন্দকার খলিলুর রহমান, একুশের আলোর প্রধান নির্বাহী মাহবুবুল হক, জাহিদুল ইসলাম বাদশা, ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কালাম কাজলসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা।

বক্তরা বলেন, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জের মেধাবী তরুণ তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে অপহরণ করা হয়েছিল, যার লাশ ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীতে পাওয়া যায়। ৮ মার্চ রাতেই ত্বকীর পিতা নারায়ণগঞ্জের বিশিষ্ট সমাজকর্মী রফিউর রাব্বি নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় আসামী অজ্ঞাত উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২৮ মে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)-এর কাছে ন্যস্ত করা হয়। ২৯ জুলাই দুইজন আসামী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় এবং কোথায়, কখন, কারা, কীভাবে এবং কেন ত্বকীকে হত্যা করেছে তার বিশদ বর্ণনা দেয়। ৭ আগস্ট একটি টর্চারসেলে অভিযান পরিচালনা করে রক্তমাখা প্যান্ট, রক্তমাখা গজারীকাঠের লাঠি, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদি ও পিস্তলের অংশসহ কিছু আলামত সংগ্রহ করে র‌্যাব।

৫ মার্চ ২০১৪, র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল হাসান র‌্যাবের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সামনে র‌্যাব ত্বকী হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবি জানান। মোট ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা জানান। এই সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবেদন ৫ মার্চ ২০১৪ তারিখে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত এবং পরদিন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগপত্র তৈরি করে সাংবাদিকদের সরবরাহ করা হয় এবং অচিরেই তা আদালতে পেশ করা হবে বলে জানানো হয়।

এই পর্যায়ে এসে ত্বকী হত্যার বিচার প্রক্রিয়া থেমে যায়। কেননা আজ পর্যন্ত আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়নি। এই হত্যার পর থেকে অদ্যাবধি ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদী কর্মসূচিসহ হত্যার বিচারেরদাবিতে অনেক কর্মসূচি পালিত হয়ে আসলেও এক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি নেই। যেন এক বিচারহীনতার আবর্তে আটকে আছে এই মর্মান্তিক হত্যাকান্ড।

শুধুমাত্র ত্বকী হত্যা-ই নয়, ২০১১ সালে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার একযুগ পেরিয়ে গেলেও তার অভিযোগপত্র আজও পেশ করা হয়নি। তদন্তকারী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে ৯৪ বার সময় বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নেই কুমিল্লার তরুণী সোহাগী জাহান তনু হত্যারও।

এমনিভাবে সারাদেশে গুম, অপহরণ ও হত্যার ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটে চলছে; যার বিচার হচ্ছে না। আর এভাবেই গড়ে উঠছে বিচারহীনতার সংস্কৃতি – যা একটি সভ্যসমাজে কাম্য নয়।

৬ মার্চ সোমবার ত্বকী অপহরণের এক দশক পূর্ণ হয়েছে। নাগরিক সংগঠন সুজন এই দিনটিকে বেছে নিয়েছে বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর দিন হিসেবে। এই দিন ত্বকী হত্যাসহ সকল হত্যার বিচারের দাবিতে সুজন খুলনাসহ সারাদেশে মানববন্ধনের কর্মসূচি পালন করেছে। উল্লেখ্য, ত্বকী হত্যার পর থেকেই সুজন-এর পক্ষ থেকে এই হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করে আসছে।

খুলনা গেজেট/ বিএম শহিদ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!