খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চাওয়াই নদীতে গোসলে নেমে প্রাণ গেল দুই শিশুর
  গরুবাহী নছিমনের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত
  জামালপুরে ধান মাড়াই করতে গিয়ে তাঁতী লীগ নেতার মৃত্যু
  দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

দাকোপে কলেজছাত্র ইমন হত্যায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৩ জন কারাগারে (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদক

দাকোপ উপজেলার কলেজছাত্র ইমরান হোসন ইমন হত্যা মামলায় বাজুয়া ৮ নং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মানষ রায়সহ ১৩ জনের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার খুলনা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দ বাগচী এ নির্দেশ দেন।

এর আগে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ওই চেয়ারম্যানসহ ১৩ জন উচ্চ আদালতে গেলে চার সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দেন।

আদালতের সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৮ জুন বাজুয়া ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো: বাদল হোসেনের ছেলে ইমন গরু নিয়ে পার্শ্ববর্তী এস এন কলেজে নিয়ে যান। কলেজ লাইব্রেরিয়ান সুকুমার রপ্তান মাঠে গরু চরাতে নিষেধ করেন। পরে তাকে চড়থাপ্পড়ও মারেন। পাশের মাঠে সুকুমারের ছেলে নিলোৎপল ২০ সহকর্মীকে নিয়ে মাঠে ফুটবল খেলছিল। বিষয়টি দেখে এগিয়ে এলে ইমন ভয়ে কিছু না বলে বাড়ি চলে আসে।

ঘটনার পরদিন সকাল ৭ টার দিকে সুকুমার ও তার স্ত্রী মিমাংশার জন্য ইমনদের বাড়ি যায়। এর কিছুক্ষণ পর ইমন নিলোৎপলকে ডাকতে তাদের বাড়ি যায়। বারান্দায় এসে নিলোৎপল ডাকার কারণ জানতে চয়। ইমন অনুরোধ করে যে তার বাবার কাছে গিয়ে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে বলে জানাতে। কিন্তু নিলোৎপল যেতে রাজি না হওয়ায় দু’জনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ইমন হাতে থাকা ছুরি তার পেটে ঢুকিয়ে দেয় এবং ঘটনাস্থলে নিলোৎপলের মৃত্যু হয়।

নিলোৎপলের ছোটবোন চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ইমনকে একটি ছবেদা গাছের সাথে বেঁধে রাখে। হাটের দিন হওয়ায় চার থেকে পাচশ’ জন মানুষ ইমনকে মারধর করে। এ দৃশ্যটি বাবা বাদল দেখলে প্রাণভয়ে সেখানে যেতে পারেনি। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। চিকিৎসার জন্য দাকোপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর একদল লোক তাদের বাড়ি লুটপাট করে। ঘটনার পর দিন ইমনের পিতা বাদী হয়ে দাকোপ থানায় অজ্ঞাতনামা ৭০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি তদন্ত করে সিআইডি। এ ঘটনার সাথে সরাসরি ৩০ জনের সম্পৃক্ততা পায়।

২০২১ সালের ২৮ মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির এসআই মো: লুৎফর মোল্লা। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলো, অনুরুদ্ধ, শাওন দাস, সেবা রায়, মানুয়েল সরদার, অমল, জয়, শান্ত ইজেদ্দার, সুকেন্দ্র রপ্তান, মানিক রায়, গোপাল মন্ডল, প্রশান্ত রায়, প্রভাস গাইন, উৎপল দাস, দ্বীন বন্ধু, মানষ মুকুল রায় (চেয়ারম্যান), প্লাবন মন্ডল, রাকেশ মন্ডল, গৌতম রপ্তান, সৌভিক রপ্তান, সুজিত রায়, গৌতম রায়, প্রদীপ ইজাদ্দার, প্রকাশ, সাগর, সোহাগ মন্ডল, বিমল রায়, উমোন রায়, সজল মন্ডল, চঞ্চল রায় ও জয়ন্ত রায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এস আই মো: লুৎফর মোল্লা খুলনা গেজেটকে জানান, উল্লিখিত আসামিদের মধ্যে পাঁচ জন পলাতক রয়েছে। এদের মধ্যে তিন জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এদের সকলে ৮ নং বাজুয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মানষ মুকুল রায় ও তার ছেলে সেবা রায়ের নাম উল্লেখ করেছেন। এরা সকলে পলাতক ছিলেন। ১২ ডিসেম্বর উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের জামিন পায় তারা। আজ রবিবার ছিল আদালতে হাজির হওয়ার দিন। আদালত তাদের ১৩ জনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!