খুলনা, বাংলাদেশ | ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২ মে, ২০২৪

Breaking News

  সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দেখালো যশোর-চুয়াডাঙ্গায় ৪২.৮ ও খুলনায় ৪২
  সাবেক ভূমিমন্ত্রীর দুর্নীতি অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন

গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পরও প্রকাশ্যে ফতেপুর প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইষ্টম

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় ঋণ খেলাপির মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার পরও প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তালা উপজেলার ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইষ্টম দাস। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার আমলী আদালত-৩ এর বিচারক মাসুমা আক্তার তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন। ইস্টম দাস সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ফতেপুর গ্রামের মৃত নগেন্দ্র নাথ দাসের ছেলে।

তালা উপজেলার শিক্ষক/কর্মচারি কোঃ অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ তালা শাখার ব্যবস্থাপকের দায়ের করা মামলা থেকে জানা যায়, উপজেলার ১৬৭ নং ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ইষ্টম দাস শিক্ষক তালা উপজেলার শিক্ষক/কর্মচারি কোঃ অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ এর ১০৫ নং সদস্য। মুনাফাসহ সমুদয় টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করার শর্তে ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর গৃহ নির্মাণের জন্য পাঁচ লাখ ২৫ হাজার টাকা গ্রহণ করেন ইষ্টম দাস। ২০২৩ সালের ৬ আগষ্ট পর্যন্ত হিসাবে ছয় লাখ ১৭ হাজার ১৩৬ টাকা পরিশোধ না করায় ইষ্টম দাস সোনালী ব্যাংক তালা শাখার একটি চেক এ ওই টাকার পরিমাণ লিখে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে একটি চেক দেন। ব্যাংকে জমা দিলে হিসাব নম্বরে টাকা না থাকায় ১৬ আগষ্ট চেকটি ডিজঅনার হয়। ৭ সেপ্টেম্বর ইষ্টম দাসকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠালে তিনি ১২ সেপ্টেম্বর তা গ্রহণ করেন। ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর টাকা দিতে পারবেন না বলে সংস্থার (তালা) ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলামকে হেঁকে দেন ইষ্টম দাস। ৫ নভেম্বর ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে ইষ্টম দাস এর বিরুদ্ধে সাতক্ষীরার আমলী আদালত-৩ এ সিআর-৩৮১/২৩ মামলা করেন। বিচারক আসামী ইষ্টম দাসের বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দিয়ে ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দেন। ধার্য দিনে আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচারক মাসুমা আক্তার আসামী ইষ্টম দাসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন।
মামলার বাদি জাহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারিও আদালতে হাজির হননি ইষ্টম দাস। ফলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে বিদ্যালয়ে আসছেন, সাতক্ষীরা শহরের এক সাংবাদিকের অফিসে সংবাদ সম্মেলন করছেন, যাচ্ছেন থানায়ও। তবে বাড়ির পাশে কোন মাইক্রোবাস গেলেই ভোঁ দৌড় দিতে ভুল করছেন না তিনি।

এদিকে তালা উপজেলার মদনপুর গ্রামের আব্দুল বারি জানান, বেসরকারি সংস্থা উত্তরণে এক সাথে চাকুরি করার সুবাদে ইষ্টম দাসের স্ত্রী অঞ্জলী দাস তার ছেলেকে জেল পুলিশে চাকুরি দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। এ সময় ইষ্টম দাসও উপস্থিত ছিলেন। চাকুরি তো দূরের কথা , গৃহীত ১৫ লাখ টাকা ফেরৎ চাওয়ায় চেক ও স্টাম্পে সাক্ষর দিয়ে ইষ্টম দাস ও অঞ্জলি দাস রয়েছেন বহাল তবিয়তে। বিষয়টি নিয়ে তিনি গত সোমবার সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, নুরুল্লাহপুর গ্রামের সহকারি শিক্ষক সুভাষ দাসের মেয়ে রমাকে চাকুরি দেওয়ার নামে এক লাখ টাকা নেওয়াসহ কমপক্ষে এক ডজন ব্যক্তির কাছ থেকে দ্ইু কোটি টাকা নিয়েছেন ইষ্টম দম্পতি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছের লোক ও গ্রাম আদালতের সহকারি হিসেবে কাজ করেন পরিচয় দিয়ে চাকুরি দেওয়ার নামে নেওয়া টাকা না দিয়ে বিভিন্ন লোকজনকে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন অঞ্জলী দাস। এ ছাড়াও গত বছরের বিদ্যালয় ভবন রুটিন মেরামতের নামে বরাদ্দকৃত ৪০ হাজার টাকা খরচ না করে পকেটস্ত করেছেন ইষ্টম দাস। কাজ না করে টাকা পকেটস্ত করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) অসীম কুমার সরকার ও সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেন অঞ্জলী। যদিও বুধবার শহরের এক সাংবাদিকের অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে তার পক্ষে আকাশ দাস বলেন যে, অপরাধ ঢাকতে সুভাষ দাসের পরিবারের সদস্যরা ইষ্টম দাস ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন।

ইষ্টম দাসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জজ কোর্টের আইনজীবী শেখ এমাদ উদ -দৌলা।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হাতে পেলে অবশ্যই আদালতের আদেশ কার্যকর করা হবে।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!