খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৭ মে, ২০২৪

Breaking News

  চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে ট্রাকের সঙ্গে ভটভটির মুখোমুখি সংঘর্ষে যুবক নিহত
  রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২

কয়রায় হাহাকারের মধ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ ও নিম্নমানের খাদ্য বিতরণ

নিতিশ সানা, কয়রা

ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে নদীর বাঁধ ভাঙ্গনে উপকূলীয় কয়রা উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম নোনা পানিতে প্লাবিত হয়। উপজেলায় ১২টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। তবে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া ও উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতির ঘেরি বাদে, বাকি বাঁধ গুলো সংস্কার করা সম্ভব হয়েছে।

এখনো পানিবন্দী রয়েছে ৩৫ গ্রামে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রসহ উঁচু বেড়িবাঁধে রয়েছে ২ হাজারের বেশি মানুষ। পানিবন্দী এলাকায় খাদ্য সংকট দেখে দিয়েছে চরম আকারে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে কিছু খাদ্য বিতরণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এদিকে অভিযোগ রয়েছে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া খাদ্য সামগ্রী চরম নিম্নমানের এছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্য ও বিতরণ করা হয়েছে।ওই খাদ্য খেয়ে শিশুসহ বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়ার অভিযোগ ও রয়েছে। ফলে জনমনে চরম ক্ষোপ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে মহারাজপুর ইউনিয়নের পশ্চিম দেয়াড়া, শিমলারাইট, গোবিন্দপুর, খেজুর ডাঙ্গা, মঠবাড়ি গুচ্ছ গ্রাম, পূর্ব মঠবাড়ি ও উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতির ঘেরী হরিহরপুরসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। মঙ্গলবার ট্রলার যোগে গাতীর ঘেরী পৌঁছালে খাদ্যের জন্য ছুটে আসে শতাধিক মানুষ।

উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতির ঘেরী এলাকার অনিশ মাহত বলেন, বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার পর আমাদের খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়েছে। ৩/৪ দিন পর চেয়ারম্যান মেম্বররা যে খাদ্য সামগ্রী দিয়েছেন তা খেয়ে আমাদের শিশুরাসহ বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে দেখি খাবার মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিলো। আর চিড়া খাওয়ার অনুুপযুক্ত হওয়ায় ফেলে দিয়েছি।

উপজেলা মহিলা আ’লীগের সভানেত্রী ও সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের মেম্বর নিলীমা চক্রবর্তী বলেন, উপজেলার সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। তাদেরকে বিতরণের আগে দেখা উচিত ছিল খাদ্য সামগ্রীর মেয়াদ আছে কিনা। আর এই খাদ্য অজপাড়া গায়ের মহিলা রান্না করে তাদের শিশুদের খাওয়ালে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

তিনি আরো বলেন, বাঁধ ভেঙে সব কিছু হারিয়ে আমরা ভিখারি হয়ে গেছি। এভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্য দিয়ে না মেরে আমাদের কিছু খরচের টাকা দেন, আমরা এদেশ ছেড়ে চলে যায়।

মহারাজপুর ইউনিয়নের পশ্চিম দেওয়াড়া গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পশ্চিম দেওয়াড়া একতা সংঘের সহ-সভাপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের এখানে অনেকের ঘর পড়ে গেছে এখনো রয়েছি পানিবন্দী, পানিতে আমাদের প্রধান আয়ের উৎস মাছের ঘের ভেসে গেছে। ফলে এলাকায় অভাব অনটন দেখা দিয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুদীপ বালা খুলনা গেজেটকে বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার খেলে শিশু ও বয়স্কদের পেটের পীড়া হতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস খুলনা গেজেটকে বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে প্যাকেট করে পাঠানো খাবার আমরা কেউ খুলে দেখিনি। বিতরণ করার পরে আমরা জানতে পেরেছি মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার ছিলো। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষদের লিখিতভাবে জানিয়েছি, যেন এ ধরনের খাবার পরবর্তীতে না দেওয়া হয়।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!