খুলনা-২ আসনে কেন্দ্র ঘোষিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যে কোনো অবস্থানকে সাংগঠনিকভাবে দমন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই বার্তা পেয়ে দুই দিনের কর্মসূচি থেকে পিছু হটেছে সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপি ও ওয়ার্ড কমিটির নেতারা। বুধবার প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে তাদের স্মারকলিপি কর্মসূচি পালন হয়নি।
আজ বৃহস্পতিবারের কর্মসূচিও পালনের সম্ভাবনা নেই। উল্টো আজ বেলা ১১টায় সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির জরুরী সভা আহ্বান করা হয়েছে। ওই সভায় ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার যৌথ ঘোষণা আসতে পারে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপির কমিটি বিলুপ্তির পর থেকে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে রয়েছে দুই পক্ষ। এক পক্ষের নেতৃত্বে নগর সভাপতি শফিকুল আলম মনা ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন।
অন্যপক্ষে রয়েছেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও বিএনপির সাবেক নেতাকর্মীরা। গত ৩ বছর ধরে কেন্দ্রীয় ও দিবসভিত্তিক কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করছেন তারা। দুই গ্রুপের নেতাদের মুখ দেখাদেখি অনেকটা বন্ধ।
চলতি বছর নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হলে তিন নেতাই খুলনা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে তৎপরতা শুরু করেন। এর মধ্যে গত ৩ নভেম্বর নজরুল ইসলাম মঞ্জুর হাতেই ধানের শীষ প্রতীক তুলে দেয় বিএনপি। এতে উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে মঞ্জু শিবিরে। সেই তুলনায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ মহানগর বিএনপির বর্তমান নেতাদের অনুসারীরা।
সূত্রটি জানায়, ধানের শীষের পক্ষে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামাতে কেন্দ্রীয় নেতা রকিবুল ইসলাম বকুলকে দায়িত্ব দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গত ৮ নভেম্বর রকিবুল ইসলাম বকুল মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটির নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন।
১০ নভেম্বর বৈঠক করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিসহ অন্য নেতাদের সঙ্গে। বৈঠকটি সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। পরদিন ১১ নভেম্বর খুলনা ক্লাবে দ্বিতীয় দফায় উভয়পক্ষে শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে খুলনা-২, খুলনা-৩ ও খুলনা-৫ আসনে ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়।
ওই বৈঠক চলা অবস্থায় দলীয় কার্যালয়ে জরুরী সভা ডেকে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানান সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপি এবং ১৬টি ওয়ার্ড বিএনপির নেতারা। তারা দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদটি ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে তাদের সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর পিছু হটেন তারা।
নগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা বলেন, ধানের শীষের পক্ষে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। থানা নেতারা কেউ কেউ বিক্ষুব্ধ থাকতে পারেন-এটা তাদের বিষয়। আমরা আজ দলীয় কার্যালয়ে সভা করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেব।
সাবেক সভাপতি ও খুলনা-২ আসনের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, অতীতের ভুল ত্রুটি, দূরত্ব ভুলে ধানের শীষের পক্ষে একসঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দু’তিন দিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি দেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম

