বৃহস্পতিবার । ২০শে নভেম্বর, ২০২৫ । ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

কঠোর লকডাউনেও চলছে এনজিওর কিস্তি আদায়, বিপাকে নিন্ম আয়ের মানুষ

মহিদুল ইসলাম, চৌগাছা

যশোরের চৌগাছায় কঠোর লকডাউন ও টানা বৃষ্টিতে সাধারণ নিন্ম আয়ের মানুষ বিভিন্ন এনজিওর কিস্তি নিয়ে পড়েছেন মহা বিপাকে। পরিবারের স্বচ্ছলতা আনতে গিয়ে সাধারণ খেটে খাওয়া নিন্ম আয়ের মানুষগুলো কঠিন শর্ত সাপেক্ষে বিভিন্ন এনজিওর থেকে কিছু টাকা লোন নেন। সারা সপ্তাহ কাজ করে অল্প অল্প করে সেই দেনা পরিশোধ করেন। কিন্তু এবার টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি ও লকডাউনে কোন কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন উপজেলার নিন্ম আয়ের সাধারণ মানুষ।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে সরকারি সিদ্ধান্তেই সারা দেশে চলছে টানা ২য় সপ্তাহের কঠোর লকডাউন। মানুষ কোন রকম ঘর থেকে বাহিরে বের হতে পারছে না। কাজ কর্ম ফেলে অবসরে কোন রকম দিন কাটছে বাড়িতে বসে। দিনের পরে দিন লকডাউন থাকায় বিভিন্ন এনজিওর কিস্তি নিয়ে নিন্ম আয়ের সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিপাকে। যেখানে মানুষের ঘরে খাবার নেই সেখানে তারা কিস্তি কিভাবে দেবেন এ নিয়ে আছেন বড় চিন্তায়।

ইতি মধ্যে অনেক এনজিওর কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন কিস্তি আদায় করতে, অনেকে কিস্তি দেওয়া নিয়ে করছেন ঝামেলা। ইতিমধ্যে কিস্তির ভয়ে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আছেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানায় গেছে, চৌগাছা উপজেলায় আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, জাগরনী চক্র, শিশু নিলয়, এসএসএফ, ব্যুরো বাংলাদেশ, আদ-দ্বীন, ব্রাকসহ প্রায় অর্ধশতাধিক বিভিন্ন এনজিওর অফিস রয়েছে। এই সকল এনজিও থেকে উপজেলার শিক্ষক, কৃষক, ভ্যান চালক, দিন মজুর, জেলে ও ছোট-বড় বিভিন্ন ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষ প্রয়োজনে বিভিন্ন শর্তে চড়া সুদে কিস্তিতে টাকা তুলে থাকেন। পরে সেই টাকা আস্তে আস্তে শোধ করেন বিভিন্ন ভাবে। কিন্তু এখন করোনা ভাইরাসের লকডাউনে কাজ কর্ম সব বন্ধ থাকায় কিস্তি দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার নিন্ম আয়ের সাধারণ মানুষ।

তবে এই সব এনজিওর এর সাথে যুক্ত থাকা বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা নাম না প্রকাশ করা শর্তে বলেন, করোনার প্রথম ধাপে কিস্তির ব্যাপারে নির্দেশনা ছিল সরকারিভাবে। কিন্তু এ লকডাউনের সময় এখনো কোন নির্দেশনা না পাবার কারণে, কিস্তি আদায় করা নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। কিস্তি আদায় নিয়ে অফিসের তোপের মুখে তারা এক প্রকার বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্রামে গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কিস্তি আদায় করছেন। এর পরেও অনেক সময় কিস্তি দেওয়া নিয়ে গ্রাহকরা বিভিন্ন ঝামেলায় জড়াচ্ছেন।

নাম না প্রকাশ করা শর্তে বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানায়, লকডাউনের ভিতরে বাজারের দোকানপাট বন্ধ থাকায় একটি কিস্তি দিতে দেরি হয়েছে তারপরও এরা একটি দিনও ছাড় দিচ্ছেন না বরং খরচসহ মোবাইলে বিকাশ করে দিতে বলছেন।

লকডাউনে যেখানে এই উপজেলার সাধারণ মানুষ কিভাবে দুবেলা দুমুঠো খাবার খাবেন এ নিয়েই কপালে ভাজ, সেখানে বিভিন্ন এনজিওর কিস্তির চাপ নিয়ে সাধারণ দিনে আনা দিনে খাওয়া মানুষগুলো পড়েছেন বড় বিপাকে। তবে একাধিক এনজিও গ্রাহকদের জোর দাবি এই লকডাউনের সময় কিস্তি আদায় কিছুদিন বন্ধ রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন