Edit Content
খুলনা, বাংলাদেশ
শুক্রবার । ২২শে আগস্ট, ২০২৫ । ৭ই ভাদ্র, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

আল্টিমেটাম, কুয়েট সংকটের সমাধান না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি শিক্ষক সমিতির

নিজস্ব প্রতিবেদক

চার মাস ধরে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকা খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’র চলমান সংকট কিছুতেই কাটছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১ তম সিন্ডিকেট সভায় ৪ মে থেকে একাডেমির কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত হলেও সে সিদ্ধান্তে সাড়া দেয়নি শিক্ষক সমিতি।

বরং ২৩ জুন সাধারণ সভার মাধ্যমে তারা সিদ্ধান্ত নেন সমিতির চলমান কর্মসূচি পূর্বের মতোই বহাল থাকবে।

অভিভাবক (ভিসি) ছাড়া যেহেতু ক্লাস পরীক্ষাসহ কোন অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয় বলে ওই সভা থেকে শিক্ষকবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে অতি দ্রুত একজন যোগ্য নিয়োগ দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া ২৯ জুনের মধ্যে ভিসি নিয়োগ করে চলমান সংকট নিরসনে পদক্ষেপ না নেওয়া হলে সমিতি পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

গণমাধ্যমে পাঠানো সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ৩ মে চুয়েটের প্রফেসর ডঃ মোঃ হযরত আলীকে অন্তবর্তীকালীন ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। অন্তবর্তী কালীন ভাইস চ্যান্সেলরকে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষকবৃন্দ, অনুষদের ডীন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, বিভাগীয় প্রধান, হল প্রভোস্ট এবং অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংবিধি ও বিধি-বিধান অনুসরণ করে চলমান সংকট নিরসনের পরামর্শ দেন। কিন্তু সংকট নিরসনে ভিসি দীর্ঘসূত্রিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি সমূহ সঠিকভাবে অনুসরণ করার ক্ষেত্রে অনিহা পরিলক্ষিত হওয়ায় সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবি করে ৪ মে হতে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকেন। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গভীর সংকটকালীন সময়ে ভিসি মহোদয় দাপ্তরিক প্রয়োজন দেখিয়ে ১৯ মে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। ইতিপূর্বে আমরা দেখেছি ভাইস চ্যান্সেলর ব্যক্তিগত অথবা দাপ্তরিক প্রয়োজনে কখনো ক্যাম্পাস ত্যাগ করলে প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা শিক্ষক এবং কর্মকর্তাবৃন্দকে চিঠি বা ইমেইল মারফত জানানো হত। অথচ অস্বাভাবিকভাবে এবার তার এই ক্যাম্পাস ত্যাগের বিষয়টি দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করা হয়নি।

তারপর থেকে অদ্যাবধি অভিভাবকহীন হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। একই সাথে ক্যাম্পাসে শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন ভাতা বন্ধসহ ক্যাম্পাসের সকল উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পরবর্তীতে ২৫ মে উদ্ভূত সংকট নিরসনে সিনিয়র টিম প্রফেসর ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি পাঠান। কিন্তু এখনও কোন সমাধান পাওয়া যায়নি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে গত ২৯ মে অপেক্ষা পরিচালনার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ ও নির্দেশনাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি প্রদান করলেও, নির্দেশনার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ঈদের পূর্বে বেতন-বোনাস করতে পারেনি।

ঈদ পরবর্তী অফিস খোলার পরে বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা না পাওয়া অদ্যাবধি বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে ভিসি নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি ৪ জুন প্রকাশিত হলে শিক্ষকবৃন্দ বিস্মিত হন, কেননা এহেন ঘটনা দেশে এটাই প্রথম। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যোগ্যতার মাপকাঠিতে এই ক্যাম্পাসে যেখানে ৬০ জনেরও বেশি প্রফেসর বিদ্যমান তথাপি মন্ত্রণালয়ের এই বিজ্ঞপ্তি একটি দীর্ঘসূত্রিতার পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

এদিকে চলমান সংকটের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে যারা সাড়ে পাঁচ বছর ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন, তারাসহ সকল শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। ঠিক একইভাবে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন এবং হতাশ অভিভাবকরাও।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন