সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে তিন নারীসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চারজন করোনা আক্রান্ত হয়ে এবং বাকি চারজন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (২২ জুন) ভোর রাত পৌনে ১ একটা থেকে রাত পৌনে ১২ টার মধ্যে বিভিন্ন সময়ে তাদের মৃত্যু হয়।
করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিরা হলেন, সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার নাজিরেরঘের গ্রামের তাহের এর ছেলে জেহাদ (৭০), একই উপজেলার সখিপুর গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে মামুন ইসলাম (৪৫), সদর উপজেলার জাহনাবাজ গ্রামের আফসার আলীর স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন (২১) ও একই উপজেলার আগরদাড়ি গ্রামের মৃত মোনতাজ উদ্দিনের ছেলে মনির উদ্দিন (৫৫), এবং করোনা উপসর্গে মারা গেছেন সাতক্ষীরা শহরের মধ্যকাটিয়া এলাকার মুছা করিমের স্ত্রী গোলজান বিবি (৭৭), সদর উপজেলার লাবসা গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে আনছারউদ্দিন (৭৫), কালিগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী দোলেনা বিবি (৫০) ও তালা উপজেলার শাহাপুর গ্রামের মৃত আইবুদ্দিনের ছেলে আবুল হোসেন (৬০)।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, করোনা আক্রান্ত হয়ে দেবহাটা উপজেলার নাজিরেরঘের গ্রামের জেহাদ গত ২২ জুন বেলা পৌন ৪ টার দিকে সামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি মারা যান।
একইভাবে দেবহাটা উপজেলার সখিপুর গ্রামের মামুন ইসলাম করোনা আক্রান্ত হয়ে ২২ জুন বেলা সোয়া ১টার দিকে সামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
এদিকে করোনা আক্রান্ত হয়ে সদর উপজেলার জাহনাবাজ গ্রামের আফসার আলীর স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন ২২ জুন বেলা পৌনে ২টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনিও মারা যান।
অপরদিকে করোনা আক্রান্ত হয়ে সদর উপজেলার আগরদাড়ি গ্রামের মনির উদ্দিন গত ২১ জুন বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে সামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ জুন বেলা ৫টার দিকে তিনি মারা যান।
এদিকে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনা নানা উপসর্গ নিয়ে ২২ জুন বেলা ১২টা ১০ মিনিটের দিকে দিকে সামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন শহরের মধ্যকাটিয়া এলাকার মুছা করিমের স্ত্রী গোলজান বিবি। হাসপাতালে ভর্তিও মাত্র দেড় ঘন্টা পর বেলা ১ টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান।
একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে ১৮ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন সদর উপজেলার লাবসা গ্রামের অনছার উদ্দিন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ জুন ভোর ৫ টা ৪০ মিনিচের দিকে তিনি মারা যান।
এদিকে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে গত ৩ জুন রাত ১১টার দিকে সামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন কালিগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী দোলেনা বিবি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ জুন ভোর ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
অপরদিকে করোনার একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে তালা উপজেলার শাহাপুর গ্রামের আবুল হোসেন ২০ জুন বেলা ৬টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ জুন ভোর রাত পৌনে ১টার দিকে তিনি মারা যান।
এনিয়ে, জেলায় এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৬৬ জন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন অন্ততঃ ২৮৭ জন।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কুদরত-ই-খোদা এসব মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মৃত ব্যক্তিদের মরদেহ দাফনের জন্য বলা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম