যশোরের চৌগাছায় বেশ কিছু ইউনিয়নের চাষিরা লতি কচুর চাষ করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বাজারে ব্যাপক চাহিদা দামও ভাল তাই চাষিরা লতি কচুর চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন, এ কারণে প্রতি বছরই লতি কচুর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপজেলার ফুলসারা, সিংহঝুলী, স্বরুপদাহ, পাশাপোল ও সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের চাষিরা গত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে লতিকচুর চাষ শুরু করেছেন। তুলনামূলক কিছুটা নিচু জমিতে এই কচুর চাষ করতে হয় এবং জমিতে বেশির ভাগ সময় পানি রাখতে হয় বলে জানান চাষিরা। কচু রোপনের তিন মাস পর হতেই লতি দেয়া শুরু হয় এবং একাধারে ২/৩ মাস লতি তোলা যায়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে দেড়’শ হেক্টর জমিতে লতিকচুর চাষ হয়েছে। অধিকাংশ ইউনিয়নে কমবেশি চাষ হলেও ফুলসারা, সিংহঝুলী ও সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নে তুলনামূলক চাষ কিছুটা বেশি। কৃষক স্থানীয় নানা জাতের লতিকচুর চাষ করেন, মূলত মার্চ মাাসের দিকে চাষ শুরু করা হয়। ইতোমধ্যে এই কচু একটি লাভজন সবজি হিসেবে কৃষকের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সরেজমিন উপজেলার ফুলসারা ও সিংহঝুলী ইউনিয়নের বেশ কিছু মাঠে যেয়ে দেখা যায়, কচুর গাড়ো সবুজ রঙের পাতার চাদোরে জমি ঢেকে আছে। এক একটি কচু গাছ ৩/৪ ফুট পর্যন্তু উচু হয়েছে। প্রতিটি গাছের গোড়া থেকে অসংখ্য লতি বের হয়ে মাটিতে আপন মনে বেড়ে উঠছে। এক একটি লতি পরিমান মত বড় হলেই কৃষক তা ক্ষেত থেকে উঠিয়ে বাজারজাত করেন। কৃষকরা জানান, লতিকচু চাষে পরিশ্রম ও খরচ কিছুটা বেশি হলেও বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা আছে। লতি দেয়া শেষ হলে কচুর ডগা ও মাটির নিচের অংশও বিক্রি হয়।
চৌগাছা প্রধান সবজি বাজারের আড়ৎদার মজনুর রহমান জানান, গত ৪/৫ বছর যাবত বাজারে কচুর লতির যোগান বেড়েছে। এতেই মনে হয় কৃষক কচুচাষ বৃদ্ধি করেছে। কচুরলতি প্রতিটি মানুষের কাছেই প্রিয় খাদ্য। আড়তে লতি আসার সাথে সাথে স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ী এমনকি দুর দুরন্ত থেকে আসা ব্যাপারীরা চড়া দামে লতি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। দাম ভাল থাকায় কৃষকও বেশ খুশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস জানান, চৌগাছার প্রতিটি এলাকায় সব ধরনের ফসল উৎপাদনের জন্য বারবরই বিখ্যাত। কৃষক নুতন নতুন ফসল উৎপাদনে যেমন পারদর্শী, আমরা কৃষি অফিসও তাদেরকে নানা ভাবে উৎসাহ যোগানোর পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছি। লতি কচু নিঃসন্দেহে একটি লাভজনক ফসল, যার কারণে প্রতি বছরই এই চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এনএম