সাতক্ষীরায় করোনা অক্রান্ত ও উপসর্গে সদর হাসপাতাল ও সিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৬ জুন) ভোর রাত দেড়টা, ২টা ও সকাল ৮টার দিকে তাদের তিন জনের মৃত্যু হয়।

এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

মৃত ব্যক্তিরা হলেন, করোনা অক্রান্ত সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার মুরারিকাটি গ্রামের ইমান আলী শেখের ছেলে মোঃ শহিদুল ইসলাম শেখ (৫৫) ও একই উপজেলার কিসমত ইলিশপুর গ্রামের মৃত ফাজেল ফকিরের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক খাইবার হোসেন (৭৫)। তিনি কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। এছাড়া করোনা উপসর্গে মারা যান শ্যামনগর উপজেলার বিড়ালক্ষী গ্রামের মোঃ আব্দুল আজিজের স্ত্রী দুলজান বিবি(৫৮)।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে গত ২ জুন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন কলারোয়ার মুরারিকাটি গ্রামের শহিদুল ইসলাম শেখ। পরে তার করোনা রির্পোট পজেটিভ আসে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার ভোর রাত দেড়টার দিকে তিনি মারা যান।

এদিকে একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে ৫ জুন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন শ্যামনগর উপজেলার বিড়ালক্ষী গ্রামের দুলজান বিবি (৫৮)। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার ভোর রাত ২টার দিকে তিনি মারা যান।

অপরদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা সিবি হাসপতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক খাইবার হোসেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ২ জুন তিনি বেসরকারি সিবি হাসপতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকালের দিকে তিনি মারা যান।

এ নিয়ে সাতক্ষীরা জেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরো অন্ততঃ ২২১ জন। এছাড়া ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৫২ জন। এছাড়া জেলায় করোনা আক্রান্ত মোট রোগির সংখ্যা ১ হাজার ৮৩৭ জন।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ ফয়সাল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মৃত তিন জনের লাশ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত সরকার জানিয়েছেন, শুরু থেকে রোববার (৬ জুন) পর্যন্ত জেলায় ১ হাজার ৮৮৬ জনের করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫১ জন। তবে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন অন্ততঃ ২২৭ জন। বর্তমানে সাতক্ষীরায় ৩৩৯ জন করোনা পজেটিভ রোগী রয়েছে। এরমধ্যে মেডিকেলে ২৭ জন ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ২৬ জন করোনা পজেটিভ রোগী ভর্তি আছেন। বাকীরা স্ব স্ব বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে প্রায় ৪০০ রোগী ভর্তি আছেন।

বর্তমানে সাতক্ষীরায় করোনা সংক্রমনের হার উর্দ্ধগতি। গত সপ্তাহখানেক যাবত সাতক্ষীরায় করোনা শনাক্তের হার ৫০ শতাংশের ওপরে বৃদ্ধি পায়। বুধবার ৯৪ জনের মধ্যে ৫০জন ও বৃহস্পতিবার ৯৩ জনের মধ্যে ৫০ জন এবং শুক্রবার ১৮৮ জনের মধ্যে ৮৯ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় ৯৪ জনের মধ্যে ৫০ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। এমন বাস্তবতায় শনিবার থেকে জেলায় সাত দিনের সর্বাত্মত লকডাউন চলছে।

খুলনা গেজেট/এমএইচবি