যশোরে পৃথক তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় মা ও ছেলেসহ চারজন নিহত হয়েছে। যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর ও শার্শার নাভারনে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
যশোর-বেনাপোল সড়কের নাভারণে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মা ও ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তাদের সাথে রায়সা নামে (৭) এক শিশু আহত হয়েছে। শিশুকে গুরুতর অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতরা হলেন, ঝিকরগাছা উপজেলার শেকলঘোনা গ্রামের শফুরা বেগম (৭২) ও তার ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪২)। শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নাভারণ কামারবাড়ি মোড়ে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত শফিকুল ইসলামের ভাইপো তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমার চাচা তার মেয়ে ও মাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে চালিয়ে নাভারণ যাচ্ছিল। পথিমধ্যে আনসার ক্যাম্প কামারবাড়ি মোড়ে পৌঁছুলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে তিনজনই গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে চাচা শফিকুল ইসলাম মারা যান ও বেলা তিনটার দিকে দাদী শফুরা বেগমও মারা যান। এছাড়া চাচাতো বোন রায়সা হাসপাতালে ভর্তি আছে।
জেনারেল হাসপাতলের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অমিয় দাশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে, শুক্রবার সকালে যশোরের অভয়নগরে ট্রাক চাপায় রবিউল ইসলাম (৫৫) নামে একজন নসিমন চালক নিহত হয়েছেন। নওয়াপাড়া জুট মিলের সামনে যশোর-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত রবিউল অভয়নগর উপজেলার পুড়াখালী গ্রামের রশিদ সরদারের ছেলে।
রবিউলের ভাই আবু তাহের জানান, তার ভাই রবিউল সকালে নসিমনে ধান বোঝাই করে পুড়াখালী থেকে ভৈরব সেতু পার হয়ে নওয়াপাড়া বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে নওয়াপাড়া জুটমিলের সামনে পৌঁছালে তার নসিমনটি উল্টে যায়। তিনি রাস্তার ওপর ছিটকে পড়েন। এসময় যশোরগামী একটি ট্রাক চাপা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে নওয়াপাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এখানে বেলা ১১টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোক্তাদিরুল হক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি মাহমুদ আলম বলেন, ট্রাক ও ইঞ্জিনচালিত নসিমনটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
অপরদিকে, যশোরের মনিরামপুরে স্বামীর মোটরসাইকেল থেকে পড়ে রহিমা বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছে৷ শুক্রবার সকাল আটটার দিকে যশোরে মণিরামপুর উপজেলার গঘুদা এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত রহিমা বেগম উপজেলার ঘরিয়া ভরতপুর গ্রামের রাশেদ হোসেনের স্ত্রী।
নিহতের স্বামী রাশেদ হোসেন জানান, শুক্রবার রাশেদ তার স্ত্রী রহিমাকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে শ্বশুর বাড়ি ভরতপুর যাচ্ছিল। পথিমধ্যে গঘুধা এলাকায় পৌছালে অসাবধানতা:বসত রহিমা মোটরসাইকেলের পেছন থেকে পড়ে গাছের সাথে ধাক্কা খায়। এসময় রাশেদ হোসেন রহিমাকে উদ্ধার করে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এখানে তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এখানে বেলা ১১টায় সার্জারি বিভাগের ইন্টার্ণ চিকিৎসক সালাউদ্দিন তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ডাক্তার সালাউদ্দীন জানান, অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) মহিউদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছে৷
খুলনা গেজেট/এমএইচবি