যশোর জেনারেল হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ে নিযুক্ত ১৭ কর্মচারী তাদের চাকরি বহালের দাবিতে প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের সামনে খাবারের প্লেট নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এসময় ওই ১৭ কর্মচারীকে বাদ দিয়ে আরএমও’র কক্ষে নতুন কর্মচারী নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা চলছিল।
আন্দোলনরতদের মধ্যে বায়েজিদ বোস্তামি, আল আমিন ও মুনিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিযুক্ত হয়ে তারা গত আড়াই বছর যশোর জেনারেল হাসপাতালে কাজ করেছেন। কাজে সন্তুষ্ট হয়ে তাদের বেতনও বাড়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। পরে নতুন ঠিকাদার কাজ পান। এর ফলে এক বছর তারা বিনা বেতনে কাজ করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তারা দাবি করছেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিযুক্ত ১৭ জনই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। বেতন বন্ধের পর তারা বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া-আসা করেন। গত একবছরে তারা হাসপাতালে কাজ করে এক টাকাও পাননি। কিন্তু এই ১৭ জনের মধ্যে সাতজন করোনা প্রতিরোধে দায়িত্ব পালনের সময় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
তারা বলেন, প্রতিষ্ঠানের সুপার ডা. দিলীপ কুমার রায়ের কাছে বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও তিনি আমাদের দিকে তাকাননি। উল্টো আমাদের তাড়ানোর জন্য পুলিশ দিয়ে, ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিযুক্ত ১৭ কর্মচারী বিনাবেতনে চাকরির বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উকিল নোটিস দিয়েছিলেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, যশোর জেলা প্রশাসক, যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়কসহ স্বাস্থ্য বিভাগের ১৪ কর্মকর্তাকে এ নোটিস পাঠানো হয়।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন গত ৩ জানুয়ারি এ নোটিস পাঠান। অভিযোগ রয়েছে, যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার দিলীপ কুমার রায়ের সদিচ্ছার অভাবে ১৭ জন কর্মচারী গত এক বছর ধরে বিনাবেতনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। বেতন চাইলে প্রথমে তাদের হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেন তত্ত্বাবধায়ক। তারা হাসপাতাল ছাড়তে না চাইলে স্বেচ্ছায় বিনাবেতনে কাজ করেছি এবং বিনাবেতনে কাজ করব, এমনটি লিখে দিতে বলা হয়।
এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার দিলীপ কুমার রায়ের বক্তব্য নিতে বার বার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি জুনিয়ার কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মধুসূদন পাল বলেন, এ ব্যাপারে আমার কোনো কিছু বলার নেই। আমাকে ভাইভা বোর্ডের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমি তা পালন করছি। সমস্ত দায়-দায়িত্ব হাসপাতালের সুপার ডা. দিলীপ কুমার রায়ের।
খুলনা গেজেট/কেএম