খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর হাজারীবাগে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে আহত কিশোরের মৃত্যু
  আগুন নিয়ন্ত্রণে, খুলনায় পাট গোডাউনসহ ১০ দোকানের কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই

ভারতের স্থগিতাদেশে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে অনিশ্চয়তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বাইরের দেশগুলোতে সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা রফতানির ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়েছে ভারত। যে কারণে সেরামের সঙ্গে ক্রয়চুক্তির আওতায় ফেব্রুয়ারি মাসের ৩০ লাখ ডোজ এবং মার্চ মাসের ৫০ লাখ ডোজ টিকা কবে আসবে সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট তথ্য নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে। ফলে টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ কার্যক্রম নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) অধিদফতরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজের (এনসিডিসি) পরিচালক ও মিডিয়া সেলের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন জানান, রফতানি স্থগিতাদেশের কারণে টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগে কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তবে আগামীকাল উপহার হিসেবে ১২ লাখ ডোজ টিকা পাঠাচ্ছে ভারত।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে বিবিসি বলছে, ভারতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় শিগগির তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা থেকেই ভ্যাকসিন রফতানি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিজেদের জনগণকে অগ্রাধিকার দিতে ভারতের ভ্যাকসিন প্রয়োজন।

বিবিসি জানিয়েছে, দেশটিতে আগামী ১ এপ্রিল থেকে ৪৫ বছরের বেশি বয়সীরা ভ্যাকসিন নিতে পারবেন। ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, এতে করে দেশের অভ্যন্তরে ভ্যাকসিনের চাহিদা বাড়বে। একইসঙ্গে কর্মকর্তারা ভ্যাকসিন রফতানির স্থগিতাদেশকে ‘সাময়িক’ বলেও উল্লেখ করেছেন।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার টিকার দাম আগাম পরিশোধ করে। চুক্তির শর্ত অনুসারে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশে আসার কথা। গত জানুয়ারিতে ৫০ লাখ ডোজ টিকা এলেও ফেব্রুয়ারি মাসে এসেছে মাত্র ২০ লাখ। চলতি মাসে এখনও কোনো টিকা আসেনি।

গত জানুয়ারি মাসেও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে ২০ লাখ টিকা পাঠানো হয়। যদিও চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের কেনা ফেব্রুয়ারি মাসের ৩০ লাখ এবং মার্চ মাসের ৫০ লাখসহ মোট ৮০ লাখ ডোজ টিকা এখনও দিতে পারেনি সেরাম ইনস্টিটিউট।

সময় মতো টিকা না এলে কর্মসূচি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এমএনসিএইচ) এবং পরিচালক (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) ডা. শামসুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, টিকা প্রয়োগ পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে ৯০ লাখ ডোজ টিকা ছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ৬০ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দেব। বাকি ৩০ লাখ দ্বিতীয় ডোজ হিসাবে সংরক্ষণ থাকবে। সেই হিসাবে এরইমধ্যে ৫০ লাখের বেশি মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামী ৭ এপ্রিল দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান শুরু করা হবে। যে পরিমাণ টিকা হাতে আছে সেগুলো এক দিন চালিয়ে নেওয়া যাবে। আশা করছি এর মধ্যেই টিকার পরবর্তী চালান দেশে আসবে।

এদিকে, ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বিবিসিকে জানায়, এপ্রিল পর্যন্ত টিকা সরবরাহের ওপর চাপ তৈরির সম্ভাবনা আছে। তবে মে মাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে। ততদিনে দেশটিতে কমপক্ষে আরও একটি নতুন টিকাকে জরুরি অনুমোদন দেওয়া হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের টিকা রফতানি স্থগিত হওয়ার প্রভাব কোভ্যাক্স স্কিমের আওতায় থাকা প্রায় ১৯০টি দেশের ওপর পড়তে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেতৃত্বে পরিচালিত কোভ্যাক্স স্কিমের লক্ষ্য হলো সব দেশগুলোর মধ্যে ভ্যাকসিনগুলোর সুষ্ঠু বণ্টন নিশ্চিত করা।

স্বাধীনতা দিবসে ১২ লাখ টিকা উপহার দিচ্ছে ভারত

মহান স্বাধীনতা দিবসের উপহার হিসেবে ১২ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেবে ভারত। করোনা মহামারি প্রতিরোধে দ্বিতীয়বারের মতো ভারত সরকার উপহার হিসেবে এই টিকা পাঠাচ্ছে। এর আগে গত জানুয়ারি মাসে ভারত ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার দিয়েছিল।

স্বাস্থ্য অধিদফতর ও ভারতীয় হাইকমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ ফ্লাইটে (এএল ১২৩০) শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুর দেড়টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে এই টিকা।

বুধবার (২৪ মার্চ) বাংলাদেশ সরকারের কাছে ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে, এই ১২ লাখ ডোজ টিকা ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এই ১২ লাখ ডোজ টিকা পাঠানো হচ্ছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ফ্লাইটটি সকাল সাড়ে ৮টায় মুম্বাই বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করবে। টিকাগুলো দ্রুত খালাসের জন্য বিমানবন্দরে রেফ্রিজারেশন ট্রাক, ফর্ক লিফট, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর অনুমোদনসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ে প্রস্তুতি রাখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আর কাজ সহজ করতে এয়ারওয়ে বিল, প্যাকিং লিস্ট, ব্যাচ রিলিজ সার্টিফিকেট ইত্যাদি কাগজপত্র এই চিঠির সঙ্গেই পাঠানো হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!