সাতক্ষীরার কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে একই পরিবারের দু’ নাবালক সন্তনসহ তাদের বাবা ও মাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার মামলায় আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন ১৬৪ ধারায় আসামি ও সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ডকারি বিচারিক হাকিম বিলাস কুমার মন্ডল ও রাকিবুল ইসলাম। সোমবার (২২ মার্চ) তারা সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমানের কাছে এ সাক্ষ্য দেন। এ নিয়ে এ মামলায় ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হল।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত বছরের ১৫ অক্টোবর দিবাগত রাতে ঘুমান্ত অবস্থায় কলারোয়া উপজেলার খলসী গ্রামের শাহিনুর গাজী (৪০) ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন (৩০) এবং তাদের ছেলে সিয়াম হোসেন (১০) ও মেয়ে তাছলিমকে (৭) হাত-পা বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় শাহিনুর গাজীর শ্বাশুড়ী ময়না খাতুন বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ওই দিনই শাহিনুর গাজীর আপন ছোট ভাই রায়হানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরদিন রায়হানুর রহমান আদালতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। এসময় সে বলে কোমল পানীয়র সাথে চেতনানাশক ঔষধ সেবন করিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় সে তার আপন বড় ভাই, ভাবী এবং ভাইয়ের ছেলে-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সিআইডি’র তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম গত ২০ নভেম্বর আদালতে একমাত্র আসামী রায়হানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ বলেন, এ পর্যন্ত মামলার বাদি ময়না খাতুন, কলারোয়া থানার উপপরিদর্শক ইসরাফিল হোসেন, তানিয়া খাতুন, আয়শা খাতুন, আনিছুর রহমান, আব্দুল কাদের, হাফিজুল ইসলাম, হেলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জম হোসেন, কনস্টেবল সোনিয়া আক্তার, কনস্টেবল মোঃ বখতিয়ার হোসেন, কনস্টেবল সিরাজুম মনীর, জব্দ তালিকার সাক্ষী সিআইডি’র সাতক্ষীরার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শফিকুল ইসলাম, ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তার, আলমগীর হোসেন, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ নাসিরউদ্দিন, বিচারিক হাকিম বিলাস কুমার মন্ডল, বিচারিক হাকিম ও রাকিবুল ইসলাম সাক্ষী দিয়েছেন। ২৫ মার্চ পরবর্তী সাক্ষী মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি পরিচালনা করেন জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ। আসামীপক্ষ মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. মোঃ ফরহাদ হোসেন ও অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান জগলু।