বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পীকে ১২ ঘণ্টা গুম করে রাখার ঘটনায় খুলনার সাবেক মেয়র-সংসদ সদস্যসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে। গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাজিদুল ইসলাম বাপ্পী লিখিতভাবে এ অভিযোগ জমা দেন। ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তাকে গুম করা হয়েছিল বাপ্পীর অভিযোগ।
অভিযুক্তরা হলেন- খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, এস এম কামাল হোসেন, বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, আবদুস সালাম মুর্শেদী, শেখ হেলাল উদ্দিন, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, আক্তারুজ্জামান বাবু, রশীদুজ্জামান মোড়ল, শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সোহেল, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, খুলনা মহানগর যুবলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহজালাল সুজন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনুর রশীদ, কেএমপি সাবেক কমিশনার মোজাম্মেল হক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী, উপ-পুলিশ কমিশনার সোনালী সেন, সহকারী কমিশনার গোপীনাথ কানজিলাল, ডিবির সাবেক উপ-কমিশনার বি এম নুরুজ্জামান, লবণচরা থানার সাবেক ওসি মনির, এস আই হাসান, এসআই সুমন মণ্ডল, সোনাডাঙ্গা থানার সাবেক ওসি মমতাজুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফ, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের এডিডি জহিরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, মুজগুন্নি আবাসিক এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে জগলুল কাদের।
অভিযোগে বাপ্পী উল্লেখ করেন, ‘সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে যাওয়ার সময় ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই সোনাডাঙ্গা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সামনে ১৫-২০ জন তাকে ইজিবাইক থেকে নামিয়ে নেয়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তার হাত-পা-চোখ বেঁধে ফেলা হয়। প্রায় ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চোখ ও হাত বেঁধে রাখা হয়। এ সময় তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আন্দোলন বন্ধ করতে চাপ দেন। রাত ১০টার দিকে তারা আবার গাড়িতে করে আড়ংঘাটা বাইপাস মোড়ের একটা সামনে ফাঁকা বাগানে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বাপ্পীকে রেখে যায়। সেখান থেকে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে।’
এতদিন পরে অভিযোগ করা প্রসঙ্গে সাজিদুল ইসলাম বাপ্পী বলেন, ‘পর দিন মামলা করতে থানায় গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে ব্যস্ততার কারণে অভিযোগ জানানো হয়নি।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা জানান, অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এএইচ/এমএম