সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ১২শ বিঘা আয়তনের ‘বিসমিল্লাহ-০৩’ নামের একটি চিংড়িঘের দখল করেছে নিয়ে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে দুই শতাধিক লাঠিয়াল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের ঝাঁপা-সোনাখালী গ্রামে অবস্থিত এই ঘেরটি দখল করে নেয়।
অভিযোগ উঠেছে, শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আমজাদুল ও ইউনিয়ন যুবদল আহবায়ক হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এই ঘের দখলের ঘটনা ঘটে। এসময় ঘেরের বাসার সিসি ক্যামেরা ভাঙচুরের পাশাপাশি কর্মচারীদের বেধড়ক মারধর করা হয়। এছাড়া ঘটনার পর থেকে ঘেরের ম্যানেজার হাবিবুর রহমানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে আতংক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঘের মালিক রবিউল্লাহ বাহারের ভাই সফিউল্লাহ জানান, দু’পক্ষের মামলা চলমান থাকায় সম্প্রতি বিজ্ঞ আদালত উক্ত ঘেরে একজন ‘রিসিভার’ নিয়োগ করেন। বাদি পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আদালত পূর্বের আদেশ স্থগিত করার পর রাত ৯টার দিকে বিএনপির সহ-সভাপতি আমজাদুল ইসলাম ও যুবদল সভাপতি হাফিজুরের নেতৃত্বে চিংড়ি ঘেরটি দখলের ঘটনা ঘটে।
সফিউল্লাহ আরও জানান, দখলের পরপরই হামলার সাথে জড়িতরা ২০/২২টি জাল ব্যবহার করে ৭০ মনেরও বেশী মাছ লুটে নেয় দুর্বৃত্তরা। ঘের দখলের খবর ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় জমির মালিকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে।
জমির মালিক মাখন লাল জানান, দীর্ঘদিন সাত্তার মোড়ল তাদের জমি জবর দখলে নিয়ে অবৈধভাবে ঘের পরিচালনা করতো। তবে ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর সাত্তার মোড়ল বিএনপির সহ-সভাপতি আমজাদুল ইসলামের কাঁধে ভর করে তাদের মত নিরীহ জমি মালিকদের জিম্মি করার পুরানো কৌশলে হেঁটেছে।
এবিষয়ে জানতে বিএনপি সহ-সভাপতি আমজাদুল ইসলামের সাথে কথার বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। যুবদল সভাপতি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন কর দেন।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দখলদার লাঠিয়াল বাহিনীর এক সদস্য জানান সন্ধ্যার পর পাখিমারা এলাকা থেকে তিন/চারশ মানুষ যেয়ে ঘেরটি দখল করেছে। এসময় কিছু ভাঙচুরসহ কর্মচারীদের সামান্য মারধরের ঘটনা ঘটেছে।
শ্যামনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে। বেআইনী কাজ করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
খুলনা গেজেট/কেডি