বিগত কয়েক বছর ধরেই ক্রেতাসাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে ইলিশ। এবারের মৌসুমেও নেই তার বেতিক্রম। ভরা মৌসুমেও চড়া জলের রুপালি ফসল ইলিশের দাম। আর ভারতে রপ্তানির ঘোষণায় ঊর্ধ্বমুখী ইলিশের দামের পালে যেমন লেগেছে হাওয়া তেমনি খুচরা বাজারে কমেছে ইলিশের আমদানি।
গেল শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানি ঘোষণার পর তিন দিনের ব্যবধানে খুলনায় বাজারভেদে কেজিতে দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে মাছ কিনতে আসা ক্রেতাদের নাভিশ্বাস অবস্থা। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) খুলনার একাধিক বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা যায়।
নগরীর কবির-বটতলা এলাকার বাসিন্দা ফেরদৌসী খানম দৌলতপুর বাজারে এসেছিলেন ইলিশ কিনতে। কিন্তু দাম শোনার পর হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে এই গৃহিণীকে। তিনি বলেন, গত তিন মাস আগে ইলিশ কিনেছিলাম। ভেবেছি ইলিশের মৌসুমে কম দামে কিনতে পারবো। কিন্তু এমনিতেই মাছের দাম বেশি, তার ওপর ভারতে রপ্তানি শুরু হওয়ায় বাজারে ইলিশ কম আসছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, বাজারে তিন দিন আগেও এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৫০০ – ১৬০০ টাকা দরে। তবে আজকের বাজারে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর দৌলতপুর, নিউমার্কেট ও কেসিসি সন্ধা বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৭০০- ৮০০ গ্রামের ইলিশ ১৪০০-১৫০০ টাকা, ১ কেজির ইলিশ ১৭০০-১৮০০ টাকা এবং ১ কেজির বেশি ওজনের ইলিশের দাম প্রায় দুই হাজারের কাছাকাছি। স্থানীয় বাজারে পদ্মা-মেঘনার ইলিশের চাহিদা বেশি থাকলেও রপ্তানির ঘোষণায় তুলনামূলক ইলিশ কম আসছে খুলনার বাজার গুলোতে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, নদী থেকে ইলিশ ধরার পর ক্রেতার কাছে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত একাধিকবার হাত বদল হয় ইলিশের। মাছ ধরার পর জেলের কাছ থেকে যায় মহাজনের হাতে। এরপর আড়তদার হয়ে যায় পাইকারদের কাছে। তারপর যখন খুচরা ব্যবসায়ী থেকে ক্রেতা পর্যন্ত পৌঁছায় তখন তা চলে যায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
তবে, নিউমার্কেটের আরেক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, দাম যে খুব একটা বেড়েছে তা বলা ঠিক হবে না। আগের মতোই আছে। ইলিশের দাম কমবেশি প্রতিদিনই ওঠানামা করে। যে দিন যেরকম দামে পাইকারি কিনে আনি সেই রকম দামে বিক্রি করতে হয়।
খুলনা গেজেট/এমএম