খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম মারা গেছেন
  ভারতে হাসপাতালে আগুন লেগে ১০ শিশুর মৃত্যু

শ ম রেজাউল ও মন্নুজানের দুর্নীতির খোঁজে দুদক

গেজেট ডেস্ক

ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের গোয়েন্দা শাখার গোপন অনুসন্ধানে এদের বিপুল সম্পদের প্রমাণ পাওয়ার পর কমিশন রোববার প্রকাশ্যে অনুসন্ধান টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে তথ্য দিয়ে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, প্রকল্পে অনিয়মসহ দেশে-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের তথ্য আমলে নেওয়া হয়েছে বলে তুলে ধরেন তিনি। অন্য যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা হলেন- মন্নুজান সুফিয়ানের এপিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ছোট ভাই মো. সাহাবুদ্দিন, তার মেয়ে শামীমা সুলতানা হৃদয় ও বোনের ছেলে ইয়াসির আরাফাত।

কমিশনের উপস্থাপন করা গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ ম রেজাউল করিম প্রথমবার গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। দ্বিতীয় দফায় তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছিলেন। এই দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নামে-বেনামে বরিশালের নাজিরপুর, পিরোজপুর ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অনেক স্থাবর সম্পদ রয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে- রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় বহুতল বাড়ি, তোপখানায় মেহেরবা প্লাজায় অ্যাপার্টমেন্ট, পূর্বাচলে একাধিক প্লট। মন্ত্রী হওয়ার পর প্লট নেয়ার ক্ষেত্রেও তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক। তার বাবার নামে সরকারি প্লট বরাদ্দ নিয়ে পরে নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ জাল এবং একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড্ডায় বাড়ি থাকার পরও রাজউকের প্লট নেয়ার তথ্যও পাওয়া গেছে। এ ছাড়া রেজাউল করিম তার বন্ধু সুখরঞ্জনের নামে রাজউকের ১০ কাঠার একটি প্লট নিয়ে ভাইয়ের নামে আমমোক্তারনামা দলিল করে ভোগ দখল করছেন মন্ত্রী। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে তিনি প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং প্রশিক্ষণের নামে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। তার স্ত্রী-সন্তান ও আত্মীয়স্বজনের নামেও দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অপরদিকে, আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মন্নুজান সুফিয়ানও ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। খুলনার বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে তার বিপুল সম্পদ রয়েছে। নিয়োগ-বদলি ও পদোন্নতি বাণিজ্য করে তার ছোট ভাই সাহাবুদ্দিন, সাহাবুদ্দিনের মেয়ে শামীমা সুলতানা ও বোনের ছেলে ইয়াসির আরাফাত কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। প্রাথমিকভাবে এদের অবৈধ সম্পদের তথ্য-প্রমাণ নিশ্চিত হওয়ার পর কমিশন অনুসন্ধান টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে পিরোজপুর-১ আসন থেকে নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম। ২০১৮ সালেও একই আসন থেকে জয়ী হন তিনি। অন্যদিকে মন্নুজান সুফিয়া ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে খুলনা-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের টিকেট পাননি।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!