ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেছেন, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সবাই যার যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করছে। যে কোন ধর্মীয় উৎসব সকলের মাঝে সম্প্রীতি বন্ধনের সৃষ্টি করে। কাউকে পেছনে ফেলে নয়, সকল সম্প্রদায়ের জনগনকে নিয়ে আমাদের সামনে এগুতে হবে।
আজ শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে বিভাগীয় পুরোহিত ও সেবাইত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়) এর আওতায় হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ ডিজিটালে পরিণত হয়েছে। এখন সবাই মিলে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী সকল ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছেন। হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে পুরোহিত ও সেবাইতরা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পুরোহিত ও সেবাইতদের চলতে হবে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নয় মাস যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এ দেশ আমাদের সকলের। বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যেতে মন্ত্রী সকলের প্রতি আহবান জানান।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মুঃ আঃ আউয়াল হাওলাদারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন উপসচিব মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জয়বেদ চৌধুরী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাজমুল হুসাইন খাঁন ও হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল। এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়) এর প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর শিখা চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি নান্টু রায়, অধ্যাপক নিমাই চন্দ্র রায়, এ্যাডভোকেট শম্ভু নাথ রায়সহ পুরোহিত ও সেবাইতরা বক্তৃতা করেন। সম্মেলনে খুলনা বিভাগের আটটি জেলার প্রায় দুইশত জন পুরোহিত ও সেবাইতরা অংশ নেন।
এই প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে ৪১,২১৬জন পুরোহিত ও সেবাইতদের নেতৃত্বদানের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নৈতিকতা ও সামাজিক মূল্যবোধ জাগ্রত করা, পুরোহিত ও সেবাইতদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার ও বিভিন্ন সামাজিক অবক্ষয় যেমন: মাদকাসক্তি, যৌতুক, সন্ত্রাস, পরিবেশ বিপর্যয়রোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা এবং উন্নত মানবসম্পদ গড়ে তুলতে সহায়তা করা, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, সামাজিক কুসংস্কার, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ রোধ এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলা সক্রিয় ভূমিকা পালন করা, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে হিন্দু আইন ও পূজা পদ্ধতি এবং ভূমি আইন ও আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে পুরোহিত ও সেবাইতকে দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা, খাদ্যপুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি ও বনায়ন, হর্টিকালচার, গবাদি পশুপালন এবং সামাজিক মূল্যবোধ সম্পর্কে পুরোহিত ও সেবাইতকে ধারনা প্রদান করা এবং পুরোহিত ও সেবাইতদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পাশাপাশি সকল ধর্মের মধ্যে আন্ত: ধর্মীয় সম্প্রীতি জাগ্রত করা।
বিকালে মন্ত্রী ডুমুরিয়ার পূর্ব বিলপাবলা কালিতলা মন্দিরে মতুয়া সম্মেলন ও কালিপূজা অনুষ্ঠানে এবং কুলটি যজ্ঞানুষ্ঠানে যোগদান করেন।
খুলনা গেজেট/ টিএ