যশোর থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকার সোনার বার আত্মসাৎ করায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে যুবক ওমর ফারুক সুমনকে। তার মৃতদেহ মাগুরা থেকে উদ্ধার করেছে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) মাগুরা সদর উপজেলার আলমখালী-পশ্চিম রামনগর থেকে নিখোঁজের ছয়দিন পর ওই মৃতদেহটি উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা ফিরোজা বেগম শার্শা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। নিহত ওমর ফারুক সুমন শার্শা উপজেলার টেংরালী গ্রামের ওসমান আলী ও ফিরোজা বেগমের ছেলে।
মামলার বাদী ফিরোজা বেগম বলেছেন, গত ১১ নভেম্বর ওমর ফারুক সুমন তার বোনের ছেলেকে সাথে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। ওইদিন রাতে ছেলে বাড়িতে না ফেরায় বিভিন্নস্থানে খোঁজ করেন। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে পরদিন শার্শা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান। কিন্তু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাদের অভিযোগটি নিতে অস্বীকৃতি জানান। থানা হতে বের হওয়ার পরই একটি নম্বর দিয়ে বাদীর ফোনে রিং দিয়ে জানায়, তোমার ছেলে সাড়ে তিন কোটি টাকার সোনার বার আত্মসাৎ করার কারণে তাকে আটকে রাখা হয়েছে। ওই সোনাগুলো ফেরত দিলে তার ছেলেকে ছেড়ে দেয়া হবে। এরপর তাদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে বেনাপোল বন্দরের ৩ নম্বর গেটের সামনে আসতে বলে। তাদের কথামতো বাদীর ভাই শিমুল বিশ্বাসকে সাথে নিয়ে বেনাপোল গাজীপুরে শাহাবুদ্দিন গোলদারের তিন তলা বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় পশ্চিম পাশের কক্ষে যায়। সেখানে গিয়ে দেখতে পান বেনাপোল ৯ নম্বর ওয়ার্ডের (বড়আঁচড়া) কামাল হোসেন, সাদীপুর গ্রামের এজাজ রহমান, শার্শার শালকোনার তরিকুল ইসলাম ও একই এলাকার পলাশ হোসেনসহ ৮-১০ জন আমার ছেলেকে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করছে। আর বলছে সোনার বার কোথায় রেখেছিস সেগুলো বের করে দে। এরপর আমার ছেলে আমাকে বলে বাড়িতে গিয়ে রাস্তার পাশে লুকানো ও বাড়ির বাক্সের ভিতর সোনার বারগুলো আছে। সেগুলো নিয়ে তাদেরকে দিয়ে দাও। কিন্তু সেখানে লোকজন নিয়ে তল্লাশি করেও সোনার কোনো বার পাওয়া যায়নি। তারপর থেকেই তার ছেলের আর কোনো সন্ধান নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, শার্শা থানার ওসি যদি প্রথমে মামলা নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন তাহলে আমার ছেলেটার মৃত্যু হতো না বলে তিনি আক্ষেপ করতে থাকেন।
বিষয়টি নিয়ে শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আকিকুল ইসলামের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ওই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে আমি সাথে সাথে মামলা গ্রহণ করি। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছিলো। কিন্তু বৃহস্পতিবার মাগুরা পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি সেখানে একটি মরদেহ পাওয়া গেছে। সেখানে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শংকর কুমারকে ও নিখোঁজ ওমর ফারুক সুমনের মাকে পাঠানো হলে তারা মৃতদেহটি শনাক্ত করেন।
খুলনা গেজেট/কেডি