খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ কার্তিক, ১৪৩১ | ৩০ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  খুলনার রূপসায় কোস্ট গার্ডের অভিযানে বোমা, অস্ত্র-গুলি ও মাদকসহ ডাকাত দলের ৪ সদস্য আটক
  নড়াইলের তুলারামপুরে গরু চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা
  চট্টগ্রামে জুস কারখানায় আগুন, এক ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণ এনেছে ফায়ার সার্ভিস
  সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ গ্রেপ্তার

খুবিতে দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

গেজেট ডেস্ক

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২৫ বছর পূর্তি উদযাপনের অংশ হিসেবে ‘ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার এবং চতুর্থ কৃষি বিপ্লব’ শীর্ষক দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন আজ ১৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) শুরু হয়েছে।

আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক। প্রধান অতিথির পক্ষে লিখিত বার্তা পড়ে শোনান কনফারেন্স অর্গানাইজিং কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. সরদার শফিকুল ইসলাম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কৃষি উন্নয়নের পুনর্বিন্যাসই হলো ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার। ইতিহাস থেকে জানা যায়- আমরা তিনটি কৃষি বিপ্লব প্রত্যক্ষ করেছি যা আমাদের চাষ, উৎপাদন এবং নিজেদের টিকিয়ে রাখার পদ্ধতিকে মৌলিকভাবে পরিবর্তন করেছে। প্রথম কৃষি বিপ্লব ছিল শিকার এবং সংগ্রহ থেকে স্থায়ী কৃষিতে রূপান্তর। দ্বিতীয়টি ছিল আমাদের ক্ষেত্রগুলির যান্ত্রিকীকরণ, যা দ্রুতগতিতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করেছে। তৃতীয়টি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য উন্নত জেনেটিক্স এবং রাসায়নিক ব্যবহার দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।

তিনি আরও বলেন, চতুর্থ কৃষি বিপ্লব বলতে উন্নত প্রযুক্তির একীকরণের মাধ্যমে কৃষির চলমান রূপান্তরকে বোঝায়। এর মধ্যে রয়েছে- ডিজিটাল এগ্রিকালচার, প্রিসিশন এগ্রিকালচার, বায়োটেকনোলজি, রোবোটিক্স ও অটোমেশন এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স। এই উন্নত প্রযুক্তিগুলো উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্ট খরা, তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের অনিয়মিত পরিবর্তন, লবণাক্ততা এবং লবণাক্ত অনুপ্রবেশ এর সাথে লড়াই করতে সহায়তা করবে। প্রিসিশন ফার্মিং, ড্রোন-সহায়তা পর্যবেক্ষণ, স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি এবং ডেটা-চালিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ চতুর্থ কৃষি বিপ্লবের প্রধান হাতিয়ার। যা, আমাদের খামারগুলোকে আরও দক্ষ, টেকসই এবং অসংখ্য চ্যালেঞ্জের প্রতি প্রাণোচ্ছল করে তোলে।

উপাচার্য বলেন, যারা স্মার্ট কৃষির গতিপথকে রূপ দিচ্ছেন- বিশেষ করে কৃষি বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, নীতিনির্ধারক এবং অনুশীলনকারীদের কাছ থেকে এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু জানতে পারছি। নিজেদের ধারণাগুলোর বিনিময় এবং পারস্পারিক সহযোগিতার কারণে কৃষির জন্য আরও টেকসই এবং স্থিতিস্থাপক ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরিতে অবদান রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, চতুর্থ কৃষি বিপ্লব দূরের কোনো স্বপ্ন নয়, এটা শুরু হয়ে গেছে। তাই আসুন একসাথে, আমরা কৃষিকে সংস্কার করার সুযোগটি গ্রহণ করি, এটিকে আরও উদ্ভাবনী, টেকসই এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিশ্বকে আরও ভালভাবে সজ্জিত করে তুলি। আমি আশা করি, আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই হবে একটি সমৃদ্ধ ও টেকসই কৃষি ভবিষ্যতের সূচনা।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আবুল কাশেম চৌধুরী ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। প্যাট্রন হিসেবে বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ। সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনফারেন্স অর্গানাইজিং কমিটির চেয়ার এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. শামীম আহমেদ কামাল উদ্দীন খান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কনফারেন্স অর্গানাইজিং কমিটির কনভেনর প্রফেসর ড. মোঃ সারওয়ার জাহান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জীববিজ্ঞান স্কুলভুক্ত ডিসিপ্লিনসমূহের প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অংশগ্রহণকারী দেশ-বিদেশের গবেষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে তিনটি থিমেটিক এরিয়াতে তিনজন থিমেটিক বক্তা তাঁদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এর মধ্যে ‘খাদ্য নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা’ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন কানাডার গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটির নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. স্টিভেন ওয়েব, ‘কৃষির অভিযোজন ও টিকে থাকা’ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন অস্ট্রেলিয়ার মারডক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. রিচার্ড বেল এবং ‘কৃষির যান্ত্রিকিকরণ ও কৃষি বিপ্লব’ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্ম পাওয়ার অ্যান্ড মেশিনারি বিভাগের প্রফেসর ড. চয়ন কুমার সাহা। উল্লিখিত থিমেটিক এরিয়াগুলোতে মোট দুই শতাধিক দেশি ও বিদেশি গবেষক অংশগ্রহণ করেন। এই কনফারেন্সে প্রায় ৬০টির মতো গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন ও শতাধিক প্রবন্ধ পোস্টারে প্রদর্শিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!