খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  মহাখালীতে সড়ক-রেললাইন অবরোধ শিক্ষার্থীদের, সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ
বিপাকে স্থানীয়রা

চৌগাছার কপোতাক্ষ খননকালে ক্ষতিগ্রস্ত সাঁকোর চিহ্ন নেই 

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি

চৌগাছার হাজরাখানা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা কপোতাক্ষ নদের ওপর নির্মিত বাঁশের সেই সাঁকোটির কোন চিহ্ন নেই। নদ খননের সময়ে নদে একটি বাঁধ দেয়া হয়। ওই বাঁধ দিয়ে যাতায়াত করছেন কয়েক গ্রামের মানুষ। বর্ষায় কোমলমতি শিশুরা ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছে বিদ্যালয়ে। সাঁকোর স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।
উপজেলার নারায়নপুর ও পাতিবিলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামসহ পাশের বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষ ও স্কুল, মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হাজারাখানা গ্রামের পাশে কপোতাক্ষ নদের সাঁকো। দেশ বিভাগের পর হতে এ জনপদের মানুষ নদের ওই স্থানটিতে খেয়া পারাপার হতেন। আধুনিক সভ্যতার যুগে খেয়া পারাপার বাদ দিয়ে সেখানে নির্মাণ করা হয় বাঁশ -কাঠের সাঁকো। বেশ ভালোভাবেই মানুষ চলাচল করতেন।
প্রায় তিন বছর আগে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জরাজীর্ণ সাঁকো ভেঙে নতুনভাবে একটি সাকো নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সঠিক দেখাশুনার অভাবে বছর যেতে না যেতেই সাঁকোটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এরপর নদ খননের সময় সংশ্লিষ্টরা সম্পূর্ণ সাকো ভেঙে খনন কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি নদের মাঝ বরাবার মাটি ফেলে বাঁধ নির্মাণ করেন তাদের সুবিধার্তে। নদের দুই পাড়ের বাসিন্দারা কোন উপায় না পেয়ে ওই বাঁধ দিয়ে যাতায়াত করছেন। এখন বর্ষা মৌসুম সে কারণে নদের বাঁধ দিয়ে স্থানীয়দের চলাচল চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে জানান এলাকাবাসী।
এখন মানুষের কষ্ট করে নদ পারাপারের দৃশ্য দেখা যায়। এ সময় কথা হয় হাজরাখানা গ্রামের বয়:বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাকের সাথে। তিনি বলেন, নদ খননের সময় সাকোটি ভেঙে ফেলা হয়। সে সময়ে নদের মাঝখানে একটি বাঁধ দেয়া হয়। ওই বাঁধই এখন আমাদের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। এখন বর্ষাকাল বাঁধ দিয়ে চলাচল অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও কোন উপায় না পেয়ে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে নদ পার হচ্ছেন।
গ্রামের ভ্যানচালক সুমন হোসেন, কৃষক মহন্ত কুমার ও জয় কুমার বলেন, সাকো ভাঙার পর বাঁধ দিয়ে চলাচল করা হতো। নদের পাড় দিয়ে সরু পথ বেয়ে বাঁধে উঠতে হয়। বর্ষার পানিতে পুরো পথটি পিচ্ছিল হয়ে থাকছে। চলাচলের সময় অনেকে পা স্লিপ করে পড়েও যাচ্ছেন। নদের পূর্বপাড়ের (নিয়ামতপুর তালপট্টির) বাসিন্দা শিপলু খান, ইসমাইল হোসেন, নাসির উদ্দিন বলেন, বড়রা বেশ সতর্কতার সাথে নদ পার হচ্ছেন। কিন্তু শিশুদের চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টির সময় নদের মাঝ বরাবরসহ পুরো রাস্তাটি চলাচলের জন্যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। শিশুরা হাজরাখানা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পীর বলুহ দেওয়ান (র.) দাখিল মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। বর্তমান পরিস্থিতিতে অভিভাবকরা শিশুদেরকে একা ছাড়তে ভয় পাচ্ছেন।
হাজরাখানা গ্রামের গৃহবধূ ঝর্ণা খাতুন, ফুলমতি, আনোয়ারা খাতুন বলেন, নদের ওপর নির্মিত সাঁকো ছিল সকলের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু সাঁকো ভেঙে ফেলায় স্থানীয়দের চলাচলে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে নারায়নপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজরাখানা গ্রামের বাসিন্দা শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, খেয়াঘাট পারাপারে স্থায়ীভাবে কিছু একটা হওয়া দরকার। সেটি হোক সাঁকো বা ব্রিজ। আমি বিষয়টি নিয়ে উপজেলার মাসিক সমন্বয়সভায় আলোচনা করেছি।
খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!