কোনো খেলায়ই চিরদিন কেউ থাকে না। সবাইকেই এক দিন না এক দিন অবসর নিতে হয়। তাই বলে সবার বিদায় কিন্তু মসৃণ হয় না। অভিমান করে খেলা ছেড়ে দেওয়ার ভূরি ভূরি নজির আছে ফুটবল-ক্রিকেটসহ প্রায় সব খেলাতেই। আবার ফিরে আসার ঘটনাও রয়েছে। ক্রিকেটে যার প্রথম নজিরটি অস্ট্রেলিয়ার বব সিম্পসনের এবং শেষটি তামিম ইকবালের।
ইমরান খান: ১৯৭১ সালে অভিষেক হওয়া ইমরান খান ১৯৮৭ বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। তবে কয়েক মাসের মধ্যেই পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হকের অনুরোধে ক্রিকেটে ফিরেন ইমরান খান। এরপর ১৯৯২ সালে পাকিস্তানকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে ক্রিকেট ছাড়েন তিনি।
জাভেদ মিয়াদাঁদ: ইমরানের মতো জাভেদ মিয়াদাঁদও অবসর নিয়ে আবার ফিরে এসেছিলেন। তবে তিনি ইমরানের মতো কয়েক মাস নেননি, অবসরের মাত্র ১০ দিনের মধ্যে ফিরে এসেছিলেন। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো তাঁকে ১৯৯৬ বিশ্বকাপ খেলার জন্য অনুরোধ জানালে ফিরেছিলেন তিনি।
কার্ল হুপার: ১৯৯৯ বিশ্বকাপের মাত্র তিন সপ্তাহ আগে ফর্মের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় অবসরের ঘোষণা দিয়ে পুরো ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার কার্ল হুপার। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ২০০১ সালে ক্রিকেটে ফেরেন তিনি এবং ২০০৩ বিশ্বকাপে উইন্ডিজকে নেতৃত্বও দেন।
গ্রান্ট ফ্লাওয়ার: ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ে বোর্ড হিথ স্ট্রিককে অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দিলে দলটির বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার অবসরের হুমকি দিয়েছিলেন। তাদের হুমকিতেও স্ট্রিককে পুনর্বহাল করা না হলে গ্রান্ট ফ্লাওয়ারসহ জিম্বাবুয়ের ১৩ জন ক্রিকেটার অবসর নিয়েছিলেন। তবে ছয় বছর পর ২০১০ সালে সবাইকে অবাক করে দিয়ে আবার জাতীয় দলে ফিরেছিলেন গ্রান্ট ফ্লাওয়ার। তবে ফর্ম না থাকায় ওই বছরই আবার অবসরে চলে যান তিনি।
কেভিন পিটারসেন: টেস্টে পুরো মনোযোগ দেওয়ার জন্য ২০১১ সালে অনেকটা আচমকাই সীমিত ওভারের ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন ইংল্যান্ডের তারকা ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসেন। তবে কয়েক মাস পরই আবার তিন ফরম্যাটেই ফেরেন তিনি। তবে ইসিবির (ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড) সঙ্গে ঝামেলায় তিনি এখনও আনুষ্ঠানিক অবসর নেননি।
শহীদ আফ্রিদি: অবসর ভেঙে ফিরে আসার বিষয়ে সবচেয়ে পরিচিত ক্রিকেটার হলেন শহীদ আফ্রিদি। পাকিস্তানের এ অলরাউন্ডার তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ ১১ বছরে পাঁচবার অবসর নিয়েছেন। প্রথম অবসর নেন তিনি টেস্ট থেকে ২০০৬ সালে। দুই সপ্তাহের মধ্যেই ফিরে আসেন। ২০১০ সালে অধিনায়ক হিসেবে একটি টেস্ট খেলে এ ফরম্যাটকে বিদায় জানান তিনি। এরপর ২০১১ বিশ্বকাপের পর কোচ ওয়াকার ইউনিসের সঙ্গে দ্বন্দ্বে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে ছিলেন। পাঁচ মাস পর আবার ফিরে আসেন। এরপর ২০১২ সালে ওয়ানডেকে বিদায় জানিয়ে আবার ফিরে আসেন এবং ২০১৫ বিশ্বকাপের আবার ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। এরপর ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে পাকাপাকিভাবে অবসর নেন তিনি।
তামিম ইকবাল: গত ৬ জুলাই অভিমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বাংলাদেশি ওপেনার তামিম ইকবাল। তবে অবসরের পরদিনই প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে ক্রিকেটে ফেরেন তিনি।
খুলনা গেজেট/কেডি