দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার চালু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১লা জুন) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে অপারেশন থিয়েটারের উদ্বোধন করেন মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ শাহিন হাসান জুয়েল।
উদ্বোধনের পরপরই ১৯ বছরের বৈবাহিক জীবনে প্রথম মা হতে যাওয়া ময়না বেগম নামে এক প্রসূতি মায়ের সিজারিয়ান অপারেশন সম্পন্ন হয়। সিজারে তিনি পুত্র সন্তানের মা হয়েছেন। ডা. মেহেদী হাসান, ডা. সিরাজুম মুনিরা মিতু (সার্জন), ডা. আফসানা নাইমা হাসান (সহঃ সার্জন) এর নেতৃত্বে এই অপারেশন সম্পন্ন হয়। মা এবং নবজাতক দু’জনেই সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে।
অপারেশন থিয়েটারের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির অভাবে দীর্ঘকাল ধরেই এ সরকারি হাসপাতালে সিজারসহ সব ধরনের অপারেশন বন্ধ ছিল। বর্তমানে দায়িত্বে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ শাহীনের উদ্যোগে একযুগ পর অপারেশন থিয়েটারটি চালু হয়েছে।
এর আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে সর্বশেষ মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অপারেশন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ শাহিন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ এক যুগ পর অবশেষে অপারেশন থিয়েটার চালু হয়েছে। এটি চালু হওয়ায় পার্শ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলার রোগীরা এখান থেকে বিনামূল্যে সেবা পাবেন।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ প্রতিক্ষিত এই অপারেশন থিয়েটার চালুর ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। এ বিষয়ে সবসময় উৎসাহ এবং সার্বিক সহযোগিতা করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার। তবে বাগেরহাট জেলার সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন আহমেদ স্যারের সহযোগিতা না পেলে ওটি চালু করা আমার জন্য সম্ভব হতো না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। দিনে দিনে রোগীর চাপ বাড়ার কারণে ২০০৭ সালে হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় রুপান্তরিত করা হয় নতুন একটি ভবন তৈরির মাধ্যমে। ভবনটিতে রয়েছে একটি অপারেশন থিয়েটার, তিনটি বেড নিয়ে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড, তিনটি কেবিন যার একটি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। নিচতলায় বহির্বিভাগে রোগী দেখা হয়। সব মিলিয়ে ১২টি শয্যা নিয়ে পুরুষ ওয়ার্ড, ১৯টি শয্যা নিয়ে মহিলা ওয়ার্ড, সাতটি শয্যা নিয়ে গাইনী ওয়ার্ড, ছয়টি শয্যা নিয়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ড ও ছয়টি শয্যা নিয়ে শিশু ওয়ার্ড রয়েছে।
উল্লেখ্য, এখন থেকে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতি সোমবার সিজারিয়ান ও সাধারন মেজর অপারেশন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। যার ফলে এ অঞ্চলের চিকিৎসা সেবা প্রত্যাশি সাধারণ মানুষের বহুদিনের চাওয়া পাওয়ার অবসান ঘটলো।
খুলনা গেজেট/এনএম