কলারোয়ায় রাতের আধারে ঘরের মধ্যে ভগ্নিপতির দেয়া পেট্রোলের আগুনে দগ্ধ হয়েছেন শ্যালক, তার স্ত্রী ও শিশু কন্যা। তাদের মধ্যে শ্যালক কাদের হোসেনের অবস্থা আশংকাজনক| এ ঘটনায় পুলিশ সোহাগ হোসেন (২২)নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে-উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের ৩নং নম্বর ওয়ার্ড চন্দনপুর গ্রামে শনিবার দিবাগত (২৭মে) রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ওই গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে কাদের হোসেনের ঘরের দরজায় বাইরে তালাবদ্ধ করে জানালা দিয়ে কে বা কারা পেট্রোল ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় ঘুমন্ত অবস্থায় তাৎক্ষণিক আগুনে দগ্ধ
হয়ে দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ থাকায় তারা ঘর থেকে বের হতে পারেনি। এসময় আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত হন কাদের হোসেন (২৭), তার স্ত্রী শারমিন (২৪) ও শিশু কন্যা ফাতেমা (৪)। তাদের চিৎকারে আশপাশের ঘুমন্ত প্রতিবেশিরা উঠে
এসে জানালার রড ও তালা ভেঙ্গে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ক্লিনিকে ও পরে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে আশংকাজনক অবস্থায় কাদের হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন
ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, আহত কাদেরের সঙ্গে তার বোনের স্বামী বেনাপোলের সবুজ হোসেনের কয়েকদিন ধরে ঝামেলা চলছিলো। এমনকি মোবাইল ফোনে কাদেরকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলো সবুজ। বিষয়টি কাদের সম্প্রতি ইউপি চেয়ারম্যানকেও অবহিত করেছিলেন। আজকালের মধ্যে একটি শালিস-বৈঠকের কথা ছিলো। ভুক্তভোগি পরিবার ও প্রতিবেশিরা ধারণা করছেন ভগ্নিপতি সবুজ হোসেন দরজায় তালা মেরে জানালা দিয়ে পেট্রোল ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ডালিম হোসেন বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত সবুজের সহযোগি কাঁদপুর গ্রামের মান্নান বিহারীর ছেলে সোহাগ হোসেন (২০) কে পুলিশ আটক করেছে। সোহাগ ও সবুজ পরষ্পর বন্ধু। তারা এসময়
মামাতো-ফুফাতো ভাইরাভাই ছিলো।
গ্রেপ্তার হওয়া সোহাগের বরাত দিয়ে স্থানীয়রা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় সোহাগকে সাথে নিয়ে চান্দুড়িয়া বাজার থেকে পেট্রোল ও তালা কিনেছিলো অভিযুক্ত ভগ্নিপতি সবুজ।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে সকালে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আহত কাদের এর বোন সুফিয়া খাতুন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সোহাগ হোসেনকে আটক করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত সবুজকে আটকের চেষ্টা চলছে।
এদিকে কাদেরের বোন জানান, তার স্বামী সবুজ তাকে নির্যাতন করে। এজন্য সে স্বামীর ঘর করতে চান না। এসব নিয়ে পরিবারের মধ্যে তাদের ঝামেলা চলছিলো।
স্থানীয়রা জানান, বউ শ্বশুর বাড়িতে আসতে না চাওয়ায় গভীর রাতে ঘরে পেট্রোল ঢেলে তালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে পালিয়েছে স্বামী সবুজ। স্থানীয়রা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
খুলনা গেজেট/কেডি