সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দু’টি মামলায় ৪৮ জন আসামীর মধ্যে সাবেক এমপি হাবিবসহ চারজনের যাবজ্জীবন ও বাকি ৪৪ জনের প্রত্যেককে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছে আদালত।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বেলা ১০ টার দিকে সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডল এক জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণাকালে কারাগারে থাকা ৩৭ জন ও জামিনে থাকা দুইজন আসামী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। এই মামলায় নয়জন আসামী পলাতক রয়েছে ও দুই জন মারা গেছেন।
এর আগে গত বুধবার (১২ এপ্রিল) ধার্য্য দিনে মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে রাস্ট্রপক্ষ। সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডলর আদালতে এই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। আদালত ১৮ এপ্রিল মামলা দুটির রায়ের দিন ঘোষণা করেন।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ জানান, আদালত যথাযথ রায় দিয়েছেন। এই রায়ে আমরা সন্তষ্ট।
আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আব্দুল মজিদ জানান, ঘটনার দিন মামলার প্রধান আসামী সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব কলারোয়ায় ছিলেন না। তিনি সেদিন ঢাকাতে ছিলেন। এই রায়ে আমরা সন্তষ্ট নই। আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।
প্রসঙ্গত, বিগত ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন কলারোয়ার একজন মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে। সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে পৌঁছালে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে শেখ হাসিনার সফরসঙ্গীসহ কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মী আহত হন। এ ঘটনার এক যুগপর উচ্চ আদালতের নির্দেশে থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়। মঙ্গলবারের এই রায়ের মধ্যদিয়ে অবশেষে দুই দশক পর আলোচিত এই মামলার বিচারকার্য শেষ হয়েছে।
এর আগে একই মামলার হামলা ও ভাংচুর অংশের বিচারে গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রায় হয়। এতে বিএনপি দলীয় সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০জন আসামীর প্রত্যেকের সর্বনিন্ম ৩ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১০বছর পর্যন্ত সাজা প্রদান করা হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম