সাতক্ষীরার তালায় টাকা চুরির অপবাদে শিশুকে নির্যাতনের মামলায় ইউপি সদস্য আমিনুর ইসলাম মোড়লকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে সাতক্ষীরার লেকভিউ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত শুক্রবার রাতে ওই শিশুর বাবা আজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে তালা থানায় মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃত আমিনুর ইসলাম উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের হাতবাঁশ গ্রামের আফাজউদ্দিন মোড়লের ছেলে ও তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার।
জানা গেছে, গত ১০ নভেম্বর ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে ১ লাখ টাকা চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনার ২০ দিন পর গত ৩০ নভেম্বর শিশু রমজান আলীকে (১২) আটকে রেখে টাকা চুরির অপবাদ দেন ইউপি সদস্য আমিনুর ইসলাম মোড়ল, মাসুদ মোড়ল এবং শামীম মোড়ল। এ সময় তাঁরা শিশুটির ওপর নির্যাতন চালান। এতে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা রমজানকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের হাতবাস গ্রামের ভ্যানচালক আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলে রমজান আলী অভয়নগর হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। নভেম্বর মাসের ১০ তারিখে তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বর আমিনুর রহমানের বাড়ি থেকে ১ লাখ টাকা চুরি হয়ে যায়। ঘটনার প্রায় ২০ দিন পর ৩০ নভেম্বর (বুধবার) আমার ছেলে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি আসলে তাকে আটকে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মেম্বর আমিনুর, তার ভাই শামীম ও মাসুদ অমানুষিক নির্যাতন করে। নির্যাতনের একপর্যায়ে আমার শিশুপুত্র তাদের টাকা নিয়েছে মর্মে স্বীকার করিয়ে নেয়। সে সময় স্থানীয়রা গুরুতর আহত অচেতন অবস্থায় আমার পুত্রকে উদ্ধার করে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশু রমজানের অবস্থার তেমন কোন উন্নতি হয়নি বলে চিকিৎসক জানান।’
এদিকে গ্রেপ্তারের আগে ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান বলেছিলেন, টাকাটা রমজান নিয়েছে। সেটি স্বীকার করানোর জন্য টুকটাক মারপিট করা হয়েছে। তবে গুরুতর আহত হওয়ার মত মারপিট করা হয়নি। কিন্তু মারপিট করা না হলে অচেতন হল কিভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী রেজাউল করিম বলেন, টাকা চুরির অপবাদে শিশুকে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখনো দুই আসামি পলাতক রয়েছেন। তাঁদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।