বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বি-২০২২ ব্যাচের ৭৭৮ জন নবীন নাবিকের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার সকালে খুলনাস্থ নৌঘাঁটি বানৌজা তিতুমীর প্যারেড গ্রাউন্ডে এ শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। পরে তিনি কৃতী নবীন নাবিকদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
নৌবাহিনীর বি-২০২২ ব্যাচের নবীন নাবিকদের মধ্যে মোঃ আশিকুল ইসলাম পেশাগত ও সকল বিষয়ে সেরা চৌকস নাবিক হিসেবে ‘নৌপ্রধান পদক’ লাভ করেন। এছাড়া মোঃ ইসাহাক ইসলাম দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ‘কমখুল পদক’ এবং মোঃ কাউসার হোসেন ছাব্বির তৃতীয় স্থান অধিকার করে ‘তিতুমীর পদক’ লাভ করেন।
নৌপ্রধান নবীন নাবিকদের উদ্দেশ্যে তাঁর ভাষণে, স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর অসামান্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। সেইসাথে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী বীর নৌসেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা গভীরভাবে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছা ও পৃষ্ঠপোষকতায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটি ত্রিমাত্রিক যুগোপযোগী নৌবাহিনী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি নৌবাহিনীর এই উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে এবং আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উচ্চ মনোবল ও সাহস নিয়ে নবীন নাবিকদের একযোগে দেশের জন্য কাজ করার নির্দেশনা দেন।
তিনি জানান, নেভাল এভিয়েশনের কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য সম্প্রতি দুইটি নতুন মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সংযোজন করা হয়েছে। দেশীয় শিপইয়ার্ডে জাহাজ নির্মাণের সক্ষমতা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় খুলনা শিপইয়ার্ডে পাঁচটি পেট্রোল ক্রাফট নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে যা অতিশীঘ্রই নৌবহরে যুক্ত হবে বলে আশা করা যায়। এছাড়া নৌবাহিনীর অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নৌবহরে বিদ্যমান জাহাজসমূহের আধুনিকায়নের লক্ষ্যে আরো উন্নতমানের মিসাইল, গান এবং প্রযুক্তিসম্পন্ন অস্ত্র সংযোজনের পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবছর দুইটি ইউটিলিটি হেলিকপ্টার, তিনটি বৃহদাকারের ল্যাল্ডিং ক্রাফট ট্যাংক (এলসিটি) ক্রয়সহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি তাঁর বক্তব্যে নৌঘাঁটি তিতুমীরে নবীন নাবিক প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় থেকে অর্জিত জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে যোগ্য নাবিক হিসেবে গড়ে তোলা এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে এই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান। তিনি পেশা হিসেবে দেশ সেবা ও দেশ গড়ার পবিত্র দায়িত্বকে বেছে নেয়ায় নবীন নাবিকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সেই সাথে তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার আদর্শে উজ্জ্বীবিত হয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজেদের নিয়োজিত করার পরামর্শ দেন।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সহকারী নৌপ্রধান (পার্সোনেল), খুলনা নৌঅঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং নাবিকসহ নবীন নাবিকদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।