সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ি সাতক্ষীরা জেলাকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করেছে। মিষ্টান্ন ও দুধের কারণে এই জেলার ব্যাপক সুনামও রয়েছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চিংড়ি মাছেও জেলি পুশ করে। তালার জেয়ালা এলাকার দুধের জন্য অনেক সুনাম আছে। তারা দুধ উৎপাদন করে পুরস্কারও পেয়েছে। কিন্তু সেই এলাকার খামারীরা ক্ষতিকর জেলি দিয়ে দুধ তৈরী করছে। এটা চিন্ত করা যায়, সৃষ্টিকর্তা একটি প্রাণীর মাধ্যমে আমাদের নিয়ামত হিসেবে দুধকে দান করেছেন। সেটিও ভেজাল তৈরী করছি।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আয়োজিত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অবহিতকরণ ও বাস্তবায়ন বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা আরো বলেন, স¤প্রতি ক্যান্সার, কিডনি জটিলতা, লিভার সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগ খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। এটি খাদ্যে ভেজালের কারণে বেশি হচ্ছে। খাদ্যে ভেজাল শুধু এই উপমহাদেশের কয়েকটি দেশে দেখা যায়। উন্নত দেশগুলো খাদ্যে ভেজাল দেওয়ার বিষয়টি কখন চিন্তাই করে না। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে লাভ নাই, যদি মানুষের নৈতিকতা থেকে ঠিক না হয়, তাহলে খাদ্যে ভেজাল বন্ধ করা কঠিন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এর সভাপতিত্বে ও জেলা ক্যাবের সভাপতি অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহীর স ালনায় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজী আরিফুর রহমান। জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কহিনুর ইসলাম, র্যাব-৬ এর সাতক্ষীরা কোম্পানি কমান্ডার সাহেদুজ্জামান, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডা. জয়ন্ত সরকার, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন, জেলা সার ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের বিশ্বজিৎ সাধু, এলপিজি গ্যাস ডিলার প্রাণ নাথ দাস, মুদি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মিহির সাহা, জেলা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রাসেল, সনাকের পবিত্র মোহন দাস প্রমুখ।
সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল হাসান এবং ডিজিটাল কন্টেন্ট উপস্থাপন করেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান।
বক্তরা বলেন, সরকারি হাসপাতালে কোন রোগী গেলে সেখান থেকে দালালরা টেনে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেওয়ার কারণে অনেক রোগী এবং তার পরিবার সর্বশান্ত হচ্ছে। আমাদের দেশের চিকিৎসকদের উপর আস্থা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সে কারণে রোগ হলেই বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
বক্তরা আরও বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে নিষিদ্ধ হলেও উপকূলের মানুষ ক্ষতিকর অ্যাসবেস্টস ব্যবহার করছে। কিন্তু সরকার এটি বন্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ভোক্তার ক্ষতির দিক মাথায় রেখে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপও চোখে পড়ে না। খাদ্যে ভেজালসহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে আরও বেশি বেশি অভিযান চালানো দরকার। অভিযান পরিচালনা করে সেটার ফলোআপ না থাকার ফলে যাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়, তারা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সেই ভেজালের কারবার আরও দ্বিগুণ করে যাচ্ছে।