ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় আলোচিত জোড়া হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। ওই মামলায় আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে জেলার অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. শওকত হোসাইন এ দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন শৈলকুপা উপজেলার বৃত্তিদেবী রাজনগর গ্রামের কুদ্দুস মিয়া, কোবা মোল্লা, রইচ ও বাচ্চু। এ ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্তরা হলেন একই গ্রামের লিক্সন হোসেন, জিকু মিয়া, কলম হোসেন, আবুল বাশার ওরফে দরপন, রবিউল ইসলাম রবি, আলম মিয়া, হাবিবুল ইসলাম, ইকবাল মিয়া, মতি, তরুন মোল্লা, সাচ্চু হোসেন, মওলা, হুমায়ন, মারুফ হোসেন ও শাহিনুর ওরফে আগা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিল শৈলকুপা উপজেলার বৃত্তিদেবী রাজনগর গ্রামে হালখাতার চিঠি দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে ওই গ্রামের কফিল উদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতর যখম করে। তাকে বাঁচাতে এলে একই গ্রামের আজিম মুন্সীকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই কপিল উদ্দিন ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে আজিম মুন্সী মারা যান।
এ ঘটনায় কপিল উদ্দিনের ভাগ্নে হাবিবুর রহমান ১৭ জনকে আসামি করে শৈলকুপা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ৮ জুলাই পুলিশ ১৭ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। বাদী নারাজি পিটিশন দিলে জুডিসিয়াল তদন্ত শেষে আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে অভিযুক্ত কুদ্দুস মিয়া, কোবা মোল্লা, রইচ ও বাচ্চুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে, আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণে দণ্ডিত করা হয়।
একই মামলায় আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এদের মধ্যে আসামি (৫) নিঝুন (৬) ক্রিককে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া আসামি (৭) কলম (৮) আবুল বাশার ওরফে দরপন (৯) রবিউল ইসলাম রবি (১০) আলম (১১) হাবিবুল (১২) ইকমাল (১৩) মতি (১৪) তরুণ মোল্লা এবং (১৫) সাচ্চুকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এই মামলার (১৬) মণ্ডলা (১৭) হুমায়ন (১৮) মারুফ এবং (১৯) শাহিনুর ওরফে আগা আসামিগণের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৪ জনকে খালাস দেন আদালত। মামলার এক আসামি মৃত্যুবরণ করায় তাকে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
মামলায় রাষ্টপক্ষে অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল খালেক ও আসামি পক্ষে শামসুজ্জামান লাকী, রাশিদুল হাসান জাহাঙ্গীর ও এ এইচ এম খায়রুলজ্জামান মামলা পরিচালনা করেন।
রাষ্টপক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল খালেক জানান, আজ দীর্ঘ সময় পর, শৈলকুপার আলোচিত জোড়া খুনের মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। আদালতের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ, দীর্ঘদিন পর হলেও আমরা সঠিক বিচার পেয়েছি।
খুলনা গেজেট/ এস আই