খুলনা, বাংলাদেশ | ২৭ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১২ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯১৫
  ময়মনসিংহে ভিমরুলের কামড়ে বাবা-মেয়ের মৃত্যু
  এমন রাষ্ট্র গঠন করতে চাই যা নিয়ে দুনিয়ার সামনে গর্ব করা যায়, ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
  আজ মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরা-বিপণনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা

দিঘলিয়ার ১১ টি মৌজা কেডিএ’র মাষ্টার প্লানের আওতাভুক্ত, ভবন নির্মাণে জটিলতা

একরামুল হেসেন লিপু

২০০২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ফকিরহাট, অভয়নগর এবং খুলনা জেলার ডুমুরিয়া, রূপসা তেরখাদা এবং দিঘলিয়ারর অধিকাংশ এলাকা মাস্টার প্ল্যানের আওতাভুক্ত করে । এর আগে একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে বিষয়টি দীর্ঘদিন পরেও এলাকাবাসি অবহিত না হওয়ায় ভবণ নির্মাণে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকাবাসির মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

কেডিএ বলছে, গেজেট প্রকাশ এবং এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের মাধ্যমে এবং পত্রিকায় প্রকাশের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে জানিয়ে দেওয়া হয়।

সম্প্রতি দিঘলিয়া সদর ইউনিয়নের ব্রক্ষগাতী গ্রামে আউব সর্দার এর ছেলে হাফিজ সর্দার ব্রক্ষগাতী মৌজার হাল দাগ নাম্বার ২৪২১(অংশ) এর উপর ৫০ ফুট বাই ৩০ বর্গফুটের একতলা একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। চলতি মাসের ৭ জুলাই খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কেডিএ’র অথরাইজড অফিসার জি এম মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি বাড়ি নির্মাণকারী মোহাম্মদ হাফিজ সরদারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। যাহার স্মারক নম্বর ২৫.৪১.০০০০.০১২.৯৯.০০৩.২০.১০৭।

চিঠির বিষয়বস্তু ছিল ১৯৫২ সনের সংশোধিত ইমারত নির্মাণ আইন (১৯৮৭) সনের ১২ নং আইন অনুযায়ী অনুনোমোদিত নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা ও অননুমোদিত নির্মাণকাজ কেন ভেঙ্গে ফেলা হবে না সে সম্পর্কে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলো।

আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আপনি ১৯৫২ সালের ইমারত নির্মাণ বিধিবদ্ধ আইনের (১৯৫৩ সনের ২নং ইবি আইন) অন্তর্ভুক্ত ধারার খেলাপ করে একতলা ইমারত নির্মাণ কাজ করেছেন যাহা বিধিবদ্ধ আইনের ধারা মতে দন্ডনীয় অপরাধ।

যেহেতু আপনি উপরোক্ত অননুমোদিত নির্মাণ কাজ করেছেন সেহেতু বিধিবদ্ধ নির্মাণ কাজ (একতলা উপর দোতলা) বন্ধ রাখার জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো। ইতিপূর্বে নির্মিত কাজ ভেঙ্গে ফেলার জন্য কেন আদেশ প্রদান করা হবে না তা ৩১ জানুয়ারীর মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

অন্যথায় ১৯৫২ সনের সংশোধিত ইমারত নির্মাণ আইন (১৯৮৭) সনের ১২ এর ধারা অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ব্রক্ষগাতীর মোঃ হাফিজ সর্দার শুধু নয়, একই রকম চিঠি দিঘলিয়া থানার সামনে নির্মাণাধীন সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাশির আহন্মেদ সহ বাড়ি নির্মাণকারী এমন অনেক মালিকের কাছে ডাকযোগে পাঠিয়েছে। চিঠির বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ, ক্ষোভ, অস্থিরতা বিরাজ করছে।

অপরদিকে, দিঘলিয়া উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মাস্টার প্ল্যানের আওতাভুক্ত হওয়া এগারটি মৌজায় বসবাসকারী মানুষগুলো আওতাভুক্তের বিষয় সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এমনকি এলাকার জনপ্রতিনিধি, সামাজিক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে অবহিত নয়।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোঃ মাহবুবুল আলমের সঙ্গে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ২০০২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর দিঘলিয়া উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নে ১১ টি মৌজাকে অন্তর্ভুক্ত করে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)’র মাস্টার প্ল্যানের আওতাভুক্ত করা হয়েছে এ সংক্রান্ত কোন তথ্য আমার জানা নেই।

একই ধরণের মন্তব্য করেন দিঘলিয়া উপজেলার প্রাক্তন চেয়ারম্যান খান নজরুল ইসলাম ও বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম। দিঘলিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হায়দার আলী মোড়ল বলেন, বিষয়টি আমরা লোক মুখে শুনেছি কিন্তু এ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র আমরা হাতে পায়নি। সেনহাটি ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জিয়াউর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি মোটেও অবগত নই ।

চিঠি পাঠানোর সত্যতা এ প্রতিবেদকের কাছে নিশ্চত করেছেন কেডিএ’র অথরাইজড অফিসার জিএম মাসুদুর রহমান। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কেডিএ’র মাস্টার প্লানের আওতাভুক্ত এলাকায় বাড়ি নির্মাণ করতে হলে কেডিএ’র ছাড়পত্র, নকশা এবং অনুমোদন ছাড়া কোন ইমারত নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না।

কেডিএ’র পরিকল্পনা অফিসার মোঃ তানভীর আহমেদ খুলনা গেজেটকে বলেন, তৎকালীন সময়ে উক্ত এলাকায় জরিপ কাজ করাসহ অন্যান্য সকল বিষয়ে নিয়মানুযায়ী সকলের সাথে সভা ও সেমিনার করে উক্ত এলাকার মাস্টার প্ল্যান করা হয়। যা সরকার কর্তৃক যথাযথ নিয়ম মেনে গেজেট প্রকাশ করা হয়।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!