খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৫ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন

ভবদহ অঞ্চলে নদী খনন ও টিআরএম বাস্তবায়নের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

নিজস্ব প্রতিবেকদক, সাতক্ষীরা

ভবদহ অঞ্চলে জরুরীভাবে নদী খনন ও টিআরএম বাস্তবায়নের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সোমবার (২১ মার্চ) অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে যশোর জেলা প্রশাসকের কাছে এই স্মারকলিপি প্রদান করেন কেন্দ্রীয় পানি কমিটি ও হরি রিভার বেসিন পানি কমিটির নেতৃবৃন্দ।

কেন্দ্রীয় পানি কমিটির সভাপতি এবিএম শফিকুল ইসলাম, হরি রিভার বেসিন পানি কমিটির সভাপতি এড. কামরুজ্জামান এবং সেক্রেটারী বিষ্ণু পদ দত্ত স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বিল কপালিয়ায় টিআরএম বাস্তবায়ন, বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ বাস্তবায়ন, জরুরীভাবে হরি-টেকা-মুক্তেশ্বরী নদী খনন এবং আমডাঙ্গার রোজীপুর খাল খননের দাবি জানানো হয়।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ভবদহ এলাকায় টিআরএম বাস্তবায়িত হওয়ায় অত্র এলাকা দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়। কিন্তু তারপর থেকে অদ্যাবধি টিআরএম কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ভবদহ অঞ্চলে আবারও ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে যা এলাকার মানুষদের শংকিত করে তুলেছে। প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর আয়তনের এ এলাকায় ৫ শতাধিক গ্রামে বসবাসকারী লোকের সংখ্যা ১২ লক্ষাধিক। এ এলাকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে হরি-টেকা-মুক্তেশ্বরী, ভদ্রা ও হরিহর নদী। প্রশাসনিক দিক থেকে এলাকাটি যশোর জেলার মণিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া এবং সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার অন্তর্গত।

১৯৯৭ সালে হরি অববাহিকার বিল ভায়নায়, ২০০২ সালে টেকা-মুক্তেশ্বরী অববাহিকার বিল কেদারিয়ায় এবং ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত হরি অববাহিকার বিল খুকশিয়াতে টিআরএম বাস্তবায়িত হওয়ার ফলে দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর যাবত এলাকার মানুষ এর সুফল ভোগ করেছে। এই সময় পর্যন্ত এলাকা জলাবদ্ধ মুক্ত ছিল। খুকশিয়া বিলে টিআরএম বাস্তবায়নের পর ২০১২ সালে এর পার্শ্ববর্তী কপালিয়া বিলে টিআরএম চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অদ্যাবধি বিল কপালিয়ায় টিআরএম চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে বিগত বছর গুলোতে এলাকায় আবারও প্রচন্ড জলাবদ্ধতা চলমান রয়েছে। এ সমস্যা মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর জরুরী কর্মসূচীর আওতায় নদী খনন করে জলাবদ্ধতা প্রশমনের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এর দ্বারা ফলপ্রসু কোন ফলাফল অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না বরং নদীর অবস্থা আরও ভয়াবহ অবনতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত এলাকার জনগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চলতি বছর এলাকার মানুষ বোরো চাষাবাদ করতে পারেনি। সামনের বর্ষা মৌসুমে এলাকায় কিভাবে বসবাস করেবে তা নিয়ে শংকিত স্থানীয় জনগণ।

ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা দূর করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। যার আলোকে বিল কপালিয়ায় টিআরএমকে অন্তর্ভূক্ত করে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো বিগত ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক উক্ত প্রকল্প থেকে টিআরএম কে বাদ দেয়া হয়েছে যা এলাকার কারও কাম্য ছিল না। পরে ২০২০ সালের ২ জানুয়ারী স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্য্য, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ভবদহে আগমন এবং জনগণের সাথে মতবিনিময়ে টিআরএম বাস্তবায়নের আশ্বাসে এলাকার জনগণ আবারও আশাবাদী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু তারও কোন বাস্তবায়ন এলাকার মানুষ আজও প্রত্যক্ষ করেনি। টিআরএম বাস্তবায়ন ছাড়া অন্য কোনভাবে এলাকাকে কোনক্রমে বাঁচানো সম্ভব হবে না বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় পানি কমিটির সভাপতি এবিএম শফিকুল ইসলাম প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!