Edit Content
খুলনা, বাংলাদেশ
শুক্রবার । ২৫শে জুলাই, ২০২৫ । ১০ই শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content
সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা

যশোরে দু’শতাধিক করোনা রোগী লাপাত্তা!

জাহিদ আহমেদ লিটন, যশোর

যশোরে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কোনো পরিকল্পনা-পদক্ষেপই কাজে আসছে না। গত তিন মাসে ভাইরাস শনাক্ত হওয়া ২১৭ জন রোগী লাপাত্তা হয়েছে। এসব রোগী কোথায় আছেন, তার খবর নেই স্বাস্থ্যবিভাগ ও প্রশাসনের কাছে। নমুনা দিয়ে ঘরবন্দি না থেকে যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানো এবং রেজাল্ট পজিটিভ আসার খবর পেয়ে পালিয়ে থাকায় সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত ১০ মার্চ থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলায় ১৩ হাজার সাতশ’ ৫৭ জনের করোনা নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ফলাফল পাওয়া গেছে ১২ হাজার সাতশ’ ৪২ জনের। এতে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন তিন হাজার তিনশ’ ৩১ জন। সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৪৬ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৪০ জন।

চলতি বছরের ১২ এপ্রিল যশোরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে স্বাস্থ্যবিভাগ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপ নেয়া হয় সংক্রমণ প্রতিরোধে। যশোরবাসীকে সুরক্ষা দিতে রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় এলাকাভিত্তিক রেডজোন চিহ্নিত করে সাধারণ ছুটি ঘোষণাও করা হয়। আক্রান্তদের চিহ্নিত করে বসবাসের বাড়ি লকডাউনসহ পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থাও করা হয়। তারপরও করোনার ছোবল থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। গত এপ্রিল ও মে মাসে রোগী শনাক্ত সহনীয় পর্যায়ে থাকলে হঠাৎ করেই জুন মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরসাথে পাল্লা দিয়ে রোগী পালানোর ঘটনাও বাড়তে থাকে। ভাইরাস বহনকারী পলাতক রোগীরা যশোর জেনারেল হাসপাতালের ফ্লু কর্ণারে নমুনা দিয়েছেন। তারা শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন স্থানের ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। নমুনা দেয়ার সময় নির্ধারিত ফরমে তারা যে ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর দিয়েছেন তা ইচ্ছা করেই ভুল দিয়েছেন। ফলে প্রশাসন ও স্বাস্থ্যবিভাগের একাধিক টিম বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও তাদের সন্ধান করতে পারেননি।

করোনা আক্রান্ত যেসব রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি তাদের একটি তালিকা করেছে যশোর স্বাস্থ্যবিভাগ। ওই তালিকা অনুযায়ী জুন মাসে ৩৬ জন, জুলাইয়ে ৯২, আগস্টে ৮৯ জনসহ মোট ২১৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে পলাতক দেখানো হয়েছে। তাদের সন্ধানের জন্যে মোবাইল নম্বর ট্রাকিংসহ অন্যান্যভাবে চেষ্টা করেও স্বাস্থ্যবিভাগ ও প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। খোঁজ না পাওয়া করোনা আক্রান্তদের অবস্থান শনাক্ত করতে না পারায় বিপাকে পড়েছে তারা। নজরদারির বাইরে থাকায় আক্রান্ত এসব রোগী যত্রতত্র ঘোরাঘুরি করে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ও সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, খোঁজ না পাওয়া রোগীদের তালিকা প্রতিদিন পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চকে (ডিএসবি) হস্তান্তর করা হয়। তারা মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের পরিচয় বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মোবাইল বন্ধ রাখায় অনেক রোগীর সন্ধান করা যাচ্ছে না। এটা মোটেও ভালো খবর নয়। শনাক্ত হওয়ার পর রোগীদের যদি সঠিক নিয়মে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা না দেয়া যায় তাহলে প্রাণ সংশয়ের আশংকা যেমন রয়েছে, তেমনি তাদের এলোমেলো ঘোরাফেরায় অন্যদের মাঝে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম জানান, অসম্পূর্ণ ঠিকানা, ভুল নম্বর দেয়া, লিস্টে দেয়া নম্বরের ডিজিট কম থাকাসহ নানা কারণে অনেকের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে এদের শনাক্ত করতে পুলিশের একটি বিশেষ টিম কাজ করছে।

 

খুলনা গেজেট / লিটন /এমএম 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন