অতিথি আপ্যায়ন কিংবা রসনা তৃপ্তি করে প্রিয়জনের মন ভোলাতে সাতক্ষীরার কলারোয়ার দুলালের দইয়ের বিকল্প নেই। এই দইয়ের স্বাদ না নিয়ে কলারোয়া ছাড়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
কলারোয়ার কোনো ভোজ উৎসবে খাদ্য তালিকায় দই নেই, এমন কেউ ভাবতেই চান না। হোক না সে অতিদরিদ্র কিংবা এলাকার কোন ধনী পরিবার। কলারোয়ার সেরা দই ‘দুলালের দই’ দিন দিন হয়ে উঠেছে আত্মীয়তার সেতুবন্ধন।
দইকে কেন্দ্র করেই কলারোয়া পেয়েছে নতুন এক পরিচিতি। স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় দই এখন দিন দিন আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এখন কলারোয়ার দুলালের দইয়ের কদর সবার কাছে।
কলারোয়া পৌর সদরের তুলসীডাঙ্গা গ্রামের দুলাল ঘোষ প্রথম কলারোয়া বাজারে পরীক্ষামুলক ভাবে সরার দই তৈরী করেন। তখন দই সম্পর্কে সবার খুব একটা ভালো ধারণা ছিল না। সেই দুলালের দই-ই ধীরে ধীরে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বর্তমানে বিয়ে, জন্মদিন, পূজা, আকিকা, হালখাতা ও পারিবারিক যে কোনো অনুষ্ঠানে ‘দুলালের দই’ বিশেষ খাবার হিসাবে পরিবেশিত হচ্ছে। এই দুলালের শুধু দই নয়, মিষ্টির স্বাদও অতুলনীয়। বর্তমানে কলারোয়াতে কেউ যে কোন অনুষ্ঠান করবেন তাতে দুলালের দই ও মিষ্টি থাকবেই।
দই সম্পর্কে প্রবীণ চিকিৎসক ডাঃ আব্দুল হান্নান জানান, নিয়মিত দই খাওয়ার ১০ উপকারিতা। দই শুধু মজাদার খাবারই নয়, এটি স্বাস্থ্যকরও বটে। খাদ্য তালিকায় দুগ্ধজাত এ উপাদানটি নিয়মিত রাখলে আপনি বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত সুবিধা পাবেন। যেমন, মজবুত হাড়, দইয়ে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’, হজমে উপকার অনেকেই হজমের সমস্যার কারণে দুধ খেতে পারেন না। কিন্তু দই খেলে সমস্যা হয় না। খাবার সহজে হজম করতে সহায়তা করে দই।
দইয়ে রয়েছে অসংখ্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া। এ ব্যাকটেরিয়াগুলো দেহের ক্ষতি করে না বরং হজমে সহায়তা করে। এ ছাড়া দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও কাজ করে দইয়ের ব্যাকটেরিয়া।
দইয়ের পটাসিয়াম রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। ত্বকের জন্য উপকারী দইয়ের উপাদান ত্বককে মসৃণ করে। দইয়ের ল্যাকটিক এসিড ত্বককে পরিষ্কার করে এবং মৃত কোষ দূর করে। খাদ্যপ্রাণ দইয়ে অন্যান্য উপাদানের পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর ভিটামিন। বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ভিটামিন ‘বি-৫’, জিংক, পটাশিয়াম, ফসফরাস, আয়োডিন ও রিবোফ্লাভিন।
নিয়মিত দই খাওয়া হলে তা আপনার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। এছাড়া দই দেহের রক্তের শ্বেতকণিকা বাড়িয়ে দেয়, যা জীবাণু সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। দেহের ছত্রাক প্রতিরোধ অনেকের দেহের সংবেদনশীল অঙ্গে ছত্রাক সংক্রমণ হয়। আর এ ছত্রাকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সহায়তা করে দই।
পাকস্থলীর নানা সমস্যা দূর করতে ভূমিকা রাখে দই। বিশেষ করে ল্যাকটোজের প্রতি সংবেদনশীলতা, কোষ্টকাঠিন্য, ডায়রিয়া, কোলন ক্যান্সার ও অন্ত্রের সমস্যা দূর করতে কার্যকর দই।
নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় দই খেলে দেহের ওজন কমে। খাবারের সঙ্গে দই খাওয়া হলে তা দেহের চর্বি ব্যবহার করতে উৎসাহিত করে। এতে দেহের চর্বি কমে এবং সার্বিকভাবে ওজন কমাতে সহায়তা করে।
খুলনা গেজেট/এএ